ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

উত্তেজনার মধ্যে চাঞ্চল্যকর বার্তা দিলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

২০২৫ এপ্রিল ২৯ ১১:০৫:৩৮
উত্তেজনার মধ্যে চাঞ্চল্যকর বার্তা দিলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

ডুয়া ডেস্ক: কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এক নতুন উত্তেজনার পর্যায়ে পৌঁছেছে। সীমান্তে গত কয়েক দিনে অন্তত পাঁচবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে ভারত শত শত কাশ্মীরি বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করেছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে যে দুই দেশের মধ্যে যেকোনো সময় যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

এই প্রেক্ষাপটে এক চাঞ্চল্যকর বার্তা দিলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ। ২৯ এপ্রিল, মঙ্গলবার ডন পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "আগামী দু-তিন দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যুদ্ধ হবে কি না, তার ইঙ্গিত এই সময়ের মধ্যেই পাওয়া যাবে।"

তিনি আরও বলেন, “যদি কিছু ঘটতে হয় তাহলে এই দু-তিন দিনের মধ্যেই ঘটবে। আর যদি না ঘটে তাহলে বুঝে নিতে হবে আমরা এক বড় বিপদ এড়াতে পেরেছি।”

পাকিস্তানের বেসরকারি চ্যানেল সামা টিভি-কে দেওয়া এক মন্তব্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “এই অঞ্চলে যুদ্ধের সম্ভাবনা দিন দিন বাড়ছে। সবারই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা দরকার।”

তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, পাকিস্তান তার অস্তিত্বের ওপর সরাসরি হুমকি দেখা দিলে কেবল তখনই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা বিবেচনা করবে। দেশটি বর্তমানে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে।

এর আগে, ২২ এপ্রিল পেহেলগামের হামলার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে। আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়, পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশে ফিরে যেতে বলা হয়, সব ধরনের ভিসা বাতিল করা হয় এবং বহুদিনের পুরনো সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে ভারত।

জবাবে পাকিস্তানও একই রকম কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। ইসলামাবাদ সিমলা চুক্তি স্থগিত করার পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে আকাশপথ, বাণিজ্য এবং কূটনৈতিক সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বলেন, সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করাকে পাকিস্তান সরাসরি "যুদ্ধের ঘোষণা" বলে বিবেচনা করছে। তিনি জানান, নিজেদের পানির অধিকার রক্ষায় পাকিস্তান সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পেহেলগামে হামলাকে "ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলা" হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, “এই ঘটনার পর প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের রক্ত ফুটছে। হামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে কঠোরতম শাস্তি পেতে হবে।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন পর্যন্ত ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কাশ্মীর হামলার নিশ্চিত প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। এই অবস্থায় সামরিক পদক্ষেপ বিশ্বমঞ্চে ভারতের ন্যায্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। তবে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা এভাবে বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি যে কোনো মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

উল্লেখ্য, ইরান ও সৌদি আরব উভয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং বাংলাদেশ ও ইরান উভয়ই মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয় পক্ষকে সংযম ও শান্তিপূর্ণ সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে