ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

চলছে সামরিক প্রস্তুতি, ভারত কি পাকিস্তানে হামলা চালাবে?

২০২৫ এপ্রিল ২৪ ১৩:২৫:১০
চলছে সামরিক প্রস্তুতি, ভারত কি পাকিস্তানে হামলা চালাবে?

ডুয়া ডেস্ক: কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন পর্যটক। হামলার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে দায়ী করা হলেও এখনো পর্যন্ত দিল্লি কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করেনি। তবে প্রতিক্রিয়ায় ভারতের কড়া অবস্থান ও সামরিক প্রস্তুতি দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে যুদ্ধের শঙ্কা তৈরি করেছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং সাফ জানিয়েছেন, শুধু সন্ত্রাসীদের নয় বরং যারা এই হামলার পরিকল্পনা করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে সীমান্তে সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি পেয়েছে, বন্ধ করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত পারাপার, এমনকি ভারত একতরফাভাবে সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তিও স্থগিত ঘোষণা করেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভুল সিদ্ধান্ত বা ‘মিসক্যালকুলেশন’-এর আশঙ্কাও বাড়ছে। উভয় দেশের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র থাকায়, সংঘাত সীমিত না থেকে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

ভারতের সামরিক বিশ্লেষক শ্রীনাথ রাঘবনের মতে, ২০১৬ সালের উরি হামলা ও ২০১৯ সালের পুলওয়ামা ঘটনার পর ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল সীমিত সামরিক পদক্ষেপ। এবারের প্রতিক্রিয়াও সেই রকম কিছু হতে পারে। তবে এবার ভারতের প্রতিক্রিয়া কতটা নিয়ন্ত্রিত থাকবে, সেটাই দেখার বিষয়। তিনি বলেন, ভারত এমন একটি বার্তা দিতে চাইবে যা পাকিস্তান ও দেশের জনগণ—দুই পক্ষই বুঝতে পারে যে ভারত কঠোর ও প্রস্তুত।

তবে তার মতে, প্রতিক্রিয়ার মাত্রা বেশি হলে পাকিস্তানও পাল্টা জবাব দিতে বাধ্য হতে পারে আর এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

ইতিহাস বলে ২০১৬ সালে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ ও ২০১৯ সালে বালাকোটে বিমান হামলার পর ভারতের প্রতিশোধমূলক নীতি এক ধরনের মানদণ্ড স্থাপন করেছে। এবার যদি ভারত তার থেকে কম কিছু করে তাহলে তা দেশের জনগণের চোখে দুর্বলতা হিসেবে ধরা পড়তে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান মনে করেন, যেহেতু এই হামলায় নিহতরা বেসামরিক পর্যটক এবং প্রাণহানির সংখ্যা অনেক, তাই ভারতের জনগণের মধ্যে প্রতিশোধের চাপ বাড়ছে। কিন্তু তিনি সতর্ক করে বলেন, সীমিত প্রতিশোধ থেকেই বড় ধরনের সংঘাতে রূপ নিতে পারে এই উত্তেজনা—যা পারমাণবিক যুদ্ধ পর্যন্তও গড়াতে পারে, যদিও উভয় পক্ষই সেটা চাইবে না।

পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুসেইন হাক্কানির মতে, ভারতের সীমিত হামলা যদি ঘটে এবং তা গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার পায় তাহলে পাকিস্তানের ওপর পাল্টা জবাবের চাপ বাড়বে। এতে করে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে এবং যুদ্ধ এড়ানো কঠিন হয়ে উঠবে।

বিশ্লেষকদের সর্বশেষ মূল্যায়ন—সংঘাত যদি শুরু হয়, তা হয়তো দ্রুত শেষ হতে পারে কিন্তু তার কতদূর বিস্তার ঘটবে তা কেউ জানে না। দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের এমন উত্তেজনা গোটা বিশ্বের জন্যই এক ভয়াবহ অশনিসংকেত।

তথ্য : বিবিসি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে