ঢাকা, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

দেশের অর্থ পাচার করে দুবাইয়ে সম্পদের পাহাড়, ৭০ ভিআইপি শনাক্ত

২০২৫ এপ্রিল ২৩ ১১:৫৭:৫৯
দেশের অর্থ পাচার করে দুবাইয়ে সম্পদের পাহাড়, ৭০ ভিআইপি শনাক্ত

ডুয়া ডেস্ক: বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচারের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন ৪৫৯ বাংলাদেশি নাগরিক। এদের মধ্যে অন্তত ৭০ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গোল্ডেন ভিসা নিয়ে দুবাইয়ে বসবাসরত এই ব্যক্তিদের নামে রয়েছে ৯৭২টি সম্পত্তি, যার কাগজপত্র অনুযায়ী আনুমানিক মূল্য ৩১ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার।

দুদকের উপপরিচালক ও অনুসন্ধান দলের প্রধান রাম প্রসাদ মন্ডলের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই ৭০ ব্যক্তির নাম ও তাদের ই-টিআইএন নম্বরসহ বিস্তারিত তথ্য চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে প্রভাবশালী রাজনীতিক, ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন পেশাজীবী—যাদের কেউ কেউ সরকারি দলের ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে চিঠিতে কারো পদবী বা বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

চিঠিতে আরও বলা হয়, সন্দেহভাজন এই ব্যক্তিরা সুইস ব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থ পাচার করে দুবাইয়ে এই সম্পদ গড়েছেন। এনবিআর ও বিএফআইইউ’র কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দুদক।

তালিকাভুক্ত কিছু উল্লেখযোগ্য নাম:

আহসানুল করীম, আনজুমান আরা শহীদ, হেফজুল বারী মোহাম্মদ ইকবাল, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, গুলজার আলম চৌধুরী, ফারহানা মোনেম, সৈয়দ মাহমুদুল হক, মোস্তফা জামাল নাসেরসহ আরও অনেকে।

দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, অনুসন্ধান কর্মকর্তা প্রয়োজনে যেকোনো সময় যেকোনো প্রাসঙ্গিক নথিপত্র তলব করতে পারেন এবং কমিশন কেবলমাত্র দালিলিক প্রমাণের ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ:

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজ’ এবং ইউরোপীয় সংস্থা ‘ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরি’র তথ্য মতে, ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশিদের নামে দুবাইয়ে ৯৭২টি প্রপার্টি রয়েছে, যেগুলোর প্রকৃত বাজারমূল্য আরও বেশি হতে পারে। এসব প্রপার্টির মধ্যে ৬৪টি অবস্থিত অভিজাত এলাকা ‘দুবাই মেরিনা’তে এবং ১৯টি ‘পাম জুমেইরাহ’তে। প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, চার-পাঁচজন বাংলাদেশি একাই ৪৪ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির মালিক।

বিশ্বজুড়ে যখন অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা চলছে, তখনও দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট খাতে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এই খাতে নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, চীন ও জার্মানির মতো দেশগুলোকেও ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ।

দুদক এরই মধ্যে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত দল গঠন করেছে এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। এ প্রক্রিয়া দেশের আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে