ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

পদত্যাগ করবেন না কুয়েট উপাচার্য

২০২৫ এপ্রিল ২২ ১৮:১৪:২৭
পদত্যাগ করবেন না কুয়েট উপাচার্য

ডুয়া ডেস্ক: গত এক মাসের অধিক সময় ধরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট)। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অনশনে বসেছেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। গতকাল সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে তাঁরা অনশন শুরু করেন। উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে দেওয়া ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম আজ (মঙ্গলবার) বেলা ৩টায় শেষ হয়েছে।

এদিকে পদত্যাগে দেওয়া আলটিমেটামের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ। আজ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১টায় গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উপাচার্য বলেন, “আমাদের যেসব শিক্ষার্থী অনশন করছে, তাদের সঙ্গে শিক্ষকেরা প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছেন। তাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। এখন আমার পদত্যাগের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাজ করছে।”

তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার এ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আলোচনা দরজার না খুলবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এ চেষ্টা চলবে। কারণ, আলোচনা করে সমাধান করা ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ নেই।”

উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদ বলেন, “যেসব শিক্ষার্থী এখন অনশন করছে, তাদের কোনোভাবে মেজরিটি বলা যাবে না। এখানে আমার অল্প কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। অন্যদিকে মেজরিটি সংখ্যক শিক্ষার্থী আমাকে আবেদনপত্রে জানিয়েছে, তারা এসব আন্দোলন চায় না। আন্দোলনের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা নেই। তারা ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরতে চান। সুতরাং, আমি কী করে বুঝব যে মেজরিটি শিক্ষার্থী এ আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত?”

তিনি আরও বলেন, “কুয়েটে দায়িত্ব নেওয়ার আট মাস চলছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখানে শিক্ষার্থীদের এমন কোনো যৌক্তিক দাবি ছিল না, যেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেনে নেয়নি। তবুও হঠাৎ কেন আমাদের কিছু মেধাবী শিক্ষার্থী এত বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠল, সেটা আমাদের বুঝে আসছে না। চলমান আন্দোলন শুরুর পর থেকে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। শিক্ষকেরা গিয়েও বারবার তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন। অনশনকারীরা কারও কথা শুনছে না।”

এ সংকটের সমাধান কীভাবে হতে পারে, জানতে চাইলে কুবি উপাচার্য বলেন, “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এবং আশা রাখি, আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আমাদের যে আন্তরিকতা অব্যাহত রয়েছে– শিক্ষকেরা তাদের সঙ্গে আলোচনার যে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন—শিক্ষার্থীরা এ চেষ্টার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারলে সমাধানের পথ তৈরি হবে।”

এর আগে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রদল বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে হামলা চালায়।

অন্যদিকে, ছাত্রদল দাবি —‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের’ ব্যানারে পরিচালিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং ছাত্রশিবির মিলে তাদের ওপর হামলা চালায়। ওই ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন।

এদিকে অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ‘ছাত্রদলের নেতা-কর্মী ও বহিরাগতরা গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালালেও উপাচার্য নিরাপত্তা দিতে পারেননি। উল্টো ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের বাইরের একজন আদালতে মামলা করেছে। এ ছাড়া ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তাঁরা উপাচার্যকে অপসারণের দাবি জানালেও কোনো সুফল পাননি। তাই বাধ্য হয়ে আমরণ অনশন শুরু করেছেন।’

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

বিশ্ববিদ্যালয় এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ববিদ্যালয় - এর সব খবর



রে