ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

দ্য হিন্দু বিজনেস লাইনের প্রতিবেদন

বাংলাদেশ-সেভেন সিস্টার্স রেল প্রকল্প স্থগিত

২০২৫ এপ্রিল ২০ ২৩:২৬:৫৩
বাংলাদেশ-সেভেন সিস্টার্স রেল প্রকল্প স্থগিত

ডুয়া নিউজ: বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার অবকাঠামোভিত্তিক রেল সংযোগ প্রকল্পগুলো সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে, যা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক নয় বরং কৌশলগতভাবেও তাৎপর্যপূর্ণ। এই প্রকল্পগুলো দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক যোগাযোগ ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত ছিল।

ভারতের পরিকল্পনা ছিল তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে আরও সুসংহতভাবে যুক্ত করা, যাতে কৌশলগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ 'সিলিগুড়ি করিডোর'র ওপর নির্ভরতা কমানো যায়। সেই লক্ষ্যেই ভারত সরকার প্রায় ৫,০০০ কোটি রুপি ব্যয়ে একাধিক রেল প্রকল্প হাতে নেয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আখাউড়া-আগরতলা, খুলনা-মোংলা ও ঢাকা-জয়দেবপুর রেল সংযোগ প্রকল্প।

তবে সম্প্রতি দিল্লির পক্ষ থেকে এসব প্রকল্প স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারত সরকার জানিয়েছে, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও কর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগই এই সিদ্ধান্তের কারণ। ফলে তিনটি প্রধান প্রকল্প এবং পাঁচটি সম্ভাব্য রুটের ওপর জরিপ কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে।

স্থগিত হওয়া উল্লেখযোগ্য প্রকল্পগুলো:

  • আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ: ১২.২৪ কিমি দীর্ঘ এই রেলপথের ৬.৭৮ কিমি অংশ বাংলাদেশের মধ্যে পড়েছে।

  • খুলনা-মোংলা রেলপথ: মোংলা বন্দরকে জাতীয় রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য নির্মিত এই রেলপথ।

  • ঢাকা-টঙ্গী-জয়দেবপুর সম্প্রসারণ: যা এক্সিম ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছিল।

যদিও এই স্থগিতাদেশকে অনেকে সাময়িক মনে করছেন, তবু এটিকে যৌথ উন্নয়ন প্রচেষ্টার রাজনৈতিক নির্ভরশীলতার স্পষ্ট লক্ষণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে দিল্লি বিকল্প রুটের দিকেও নজর দিচ্ছে। নতুন পরিকল্পনায় ভুটান ও নেপাল হয়ে ভারতীয় রেল সংযোগ সম্প্রসারণ, বিহার-উত্তর প্রদেশে রেল অবকাঠামো উন্নয়ন এবং পশ্চিমবঙ্গ-বিহার সংযোগ জোরদারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশের জন্য এই পরিস্থিতি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। কারণ ভারতীয় সহায়তায় গড়ে ওঠা অবকাঠামো প্রকল্পগুলো কর্মসংস্থান, বন্দর ব্যবস্থাপনা ও বাণিজ্যিক গতিশীলতা বৃদ্ধির দিক থেকে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ছিল। এখন এসব প্রকল্প অনিশ্চয়তায় পড়ায় সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় ধাক্কা লেগেছে।

তবে এই পরিস্থিতি বাংলাদেশকে কৌশলগত বিকল্প ভাবনায় যেতে বাধ্য করছে, যেখানে চীনের মত বিকল্প উন্নয়ন অংশীদারের উপস্থিতি ভবিষ্যতের কূটনৈতিক ভারসাম্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

সার্বিকভাবে, ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যে কতটা জরুরি—এই স্থগিতাদেশ সেটিই আবারও স্পষ্ট করলো।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে