ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

ইন্দো-বাংলা ফার্মার কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে বিএসইসির তদন্ত কমিটি

২০২৫ এপ্রিল ২০ ১১:৩৮:০০
ইন্দো-বাংলা ফার্মার কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে বিএসইসির তদন্ত কমিটি

ডুয়া নিউজ: শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের আইপিও থেকে আয়, আর্থিক বিবরণী এবং সামগ্রিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।

বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ ইকবাল হোসেন তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অন্যান্য সদস্যরা হলেন- বিএসইসির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রুমান হোসেন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সিনিয়র ম্যানেজার স্নেহাশিষ চক্রবর্তী।

তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষের প্রতি আনুষ্ঠানিক চিঠি জারি করেছে বিএসইসি। তদন্ত সম্পন্ন করে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য কমিটিকে ৬০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।

বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর কোনও অনিয়ম পাওয়া গেলে কমিশন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিএসইসি কর্মকর্তাদের মতে, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকে কোম্পানির কর্মক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস পেয়েছে। ফলে এটি তার বিনিয়োগকারীদের রিটার্ন প্রদান করতে ব্যর্থ হয়েছে।

তদন্তে পরীক্ষা করা হবে, কোম্পানিটি কীভাবে আইপিওর মাধ্যমে মূলধন বাজার থেকে সংগৃহীত তহবিল ব্যবহার করেছে, যা ব্যবসা সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে ছিল।

কমিটি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনও পর্যালোচনা করবে, যার মধ্যে বোনাস শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে সংগৃহীত মূলধনও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়, তদন্ত কমিটি কোম্পানিটির স্থায়ী সম্পদ এবং আর্থিক বিবরণী মূল্যায়ন করবে।

তদন্তে কোম্পানির সামগ্রিক ব্যবসায়িক অবস্থা এবং চলমান কার্যক্রম মূল্যায়ন করা হবে। কমিটি দাবি না করা ডিভিডেন্ডও যাচাই করবে এবং অন্যান্য আর্থিক বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখবে।

ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিশ্চিত করেছেন, কোম্পানিটি তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে চিঠি পেয়েছে।

তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ডলার সংকটের কারণে কোম্পানিটি কাঁচামাল আমদানি করতে হিমশিম খাচ্ছে, যা গত বছর ধরে আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত বছরে কোম্পানিটি মাত্র দুবার ঋণপত্র (এলসি) খুলতে সক্ষম হয়েছে। এরফলে এটি স্থানীয় সরবরাহকারীদের কাছ থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে আংশিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, কোম্পানিটি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক। কোম্পানিটি ডলার ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছে। এর ফলে কোম্পানির প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানির ক্ষমতা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি উল্লেখ করেন, সীমিত কার্যক্রম এবং আমদানিকৃত কাঁচামালের ঘাটতির কারণে কোম্পানির রাজস্ব হ্রাস পেয়েছে।

যদিও ব্যাংক বারবার আশ্বাস দিয়েছে, ডলার সংকট শীঘ্রই সমাধান করা হবে। কোম্পানিটি এখন আরও সহজে এলসি খোলার জন্য এবং কাঁচামালের স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ব্যাংক পরিবর্তন করার কথা বিবেচনা করছে বলেও তিনি বলেন।

ইন্দো-বাংলা ফার্মা ২০১৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০১৯ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২ শতাংশ ক্যাশ ও ৯ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এরপর ২০২০ সালে ৪.৫০ শতাংশ ক্যাশ ও ২ শতাংশ বোনাস ২০২১ সালে ৪ শতাংশ ক্যাশ ও ৩ শতাংশ বোনাস, ২০২২ সালে ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। ২০২৩ সালে কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি। সর্বশেষ ২০২৪ সালে ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে (জুলাই-ডিসেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ০৮ পয়সা। আগের অর্থবছরে একই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ০৫ পয়সা।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে