ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে কবি রফিক আজাদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি

২০২৫ এপ্রিল ১৬ ১৭:৩৩:১৯
গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে কবি রফিক আজাদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি

ডুয়া নিউজ: ‘ভাত দে হারামজাদা, তা নাহলে মানচিত্র খাবো’—বিখ্যাত এই পঙক্তির স্রষ্টা কবি রফিক আজাদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ির একাংশ বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি ছবি ঘুরছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে কবি রফিক আজাদের ছবি সংবলিত বাড়ি। যেখানে তিনি ২৯ বছর ধরে বাস করেছেন। দারুণ সব কবিতা লিখেছেন। আছে তাঁর দিনযাপনের স্মৃতি। সেই বাড়িটির পাশের একটি অংশ বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকালে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ওই বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু করে। বিষয়টি সামনে আসতেই কবির ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বাড়িটি নিয়ে বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করা হলে কবিপত্নী দিলারা হাফিজ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, চার ইউনিটের ওই বাড়ির একটি অংশে তিনি নিজে থাকেন। বাকি তিনটি বরাদ্দপ্রাপ্ত অন্যদের দখলে। এরমধ্যে পূর্ব পাশের দুটি ইউনিট ইতোমধ্যেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

দিলারা হাফিজ আরও জানান, ১৯৮৮ সালে ইডেন কলেজে প্রভাষক থাকাকালে ‘এস্টেট অফিস’ থেকে সাময়িকভাবে বাড়িটি তাঁর নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরাদ্দপত্রে উল্লেখ ছিল, তিনি বাড়িটির মালিকানা পাবেন না, তবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে বসবাস করতে পারবেন।

২০১২ সালে বাড়িটির মালিকানা দাবি করে সৈয়দ নেহাল আহাদ নামের একজন ব্যক্তি আদালতে মামলা করেন। মামলায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরদের বিবাদী করা হয়। আদালত বাড়িটির ওপর স্থিতাবস্থা দেন, যা ২০১৩ সালে স্থায়ী করা হয়।

আগামী মে মাসের ২৫ তারিখ এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের কথা রয়েছে। তবে গতকাল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দিয়েছেন দিলারা হাফিজ। আজ বুধবার সকালে বাড়িটি উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়।

তবুও আজ সকালে বাড়িটি ভাঙার কার্যক্রম শুরু হয়। দিলারা হাফিজ অভিযোগ করেন, তাঁকে কোনো লিখিত নোটিশ দেওয়া হয়নি। শুধু মৌখিকভাবে কয়েক দিনের সময় দেওয়া হয়েছিল। ভাঙচুরের কারণে এখন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, ফলে সেখানে আর থাকা সম্ভব নয়।

এই বাড়িতে তাঁর স্বামী কবি রফিক আজাদের স্মৃতি রয়েছে। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর স্মৃতি সংরক্ষণ ও ধারণের জন্যে বাড়িটির অংশবিশেষের স্থায়ী বন্দোবস্তের আদেশ পেতে গতকালও তিনি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে গিয়েছেন।

এদিকে, কবির ভক্ত ও সংস্কৃতিপ্রেমীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কবির স্মৃতিবাহী এই বাড়িটি সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে