ঢাকা, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১

সম্পর্ক না থাকলেও ইসরায়েলে গেল লাখ লাখ ডলারের বাংলাদেশি পণ্য

২০২৫ এপ্রিল ১২ ১৪:১৭:৫২
সম্পর্ক না থাকলেও ইসরায়েলে গেল লাখ লাখ ডলারের বাংলাদেশি পণ্য

ডুয়া ডেস্ক: ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ খুলে দেয় ১৯১৭ সালের বেলফোর ঘোষণা। এরপর ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে যাত্রা শুরু করে দেশটি। পশ্চিমা সমর্থনে দীর্ঘ আট দশক ধরে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা, রাফাসহ নানা অঞ্চলে চালানো হয়েছে অব্যাহত বোমা হামলা, যাতে প্রাণ হারিয়েছেন অসংখ্য নিরীহ মানুষ।

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এখনো ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি। দুই দেশের মধ্যে নেই কোনো কূটনৈতিক বা বাণিজ্যিক সম্পর্কও। তবে এ সম্পর্ক না থাকলেও বাংলাদেশ থেকে ইসরায়েলে রপ্তানি হয়েছে বিপুল পরিমাণ পণ্য—মূল্য প্রায় ১৩ লাখ মার্কিন ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বলছে, গত ১৫ বছরে এই রপ্তানির বেশিরভাগই ছিল ওষুধ। তবে তালিকায় রয়েছে তৈরি পোশাক ও আসবাবপত্রও।

তাহলে প্রশ্ন উঠে—কিভাবে এই পণ্য যাচ্ছে ইসরায়েলে?

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, ইসরায়েলের কিছু ক্রেতা বাংলাদেশের তৈরি পণ্য কিনে থাকেন, তবে তা সরাসরি নয়। তারা তৃতীয় দেশের মাধ্যমে এসব পণ্য আমদানি করেন। ফলে ইপিবির তথ্যে "ইসরায়েল গমন" হিসেবে যে রপ্তানি দেখানো হচ্ছে তা প্রকৃতপক্ষে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে হয়ে থাকতে পারে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রেতারা নির্দিষ্টভাবে ইসরায়েলের বাজারের জন্য বাংলাদেশি পণ্য সংগ্রহ করে থাকেন। কিন্তু এসব পণ্যের গন্তব্য ঠিক করা হয় এখান থেকেই।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রায় সাড়ে ছয় লাখ ডলারের পণ্য ইসরায়েলে রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক ছাড়াও যক্ষা, ম্যালেরিয়া ও কুষ্ঠ রোগের ভ্যাকসিন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রয়েছে।

অন্যদিকে ইসরায়েল থেকে সরাসরি পণ্য আমদানির তথ্য না থাকলেও জাতিসংঘের বাণিজ্যবিষয়ক ডেটাবেস (UN Comtrade) বলছে, বাংলাদেশ গত দেড় দশকে ইসরায়েল থেকে প্রায় ৩৮ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্পর্ক না থাকার পরও ইসরায়েলের মতো একটি দেশের সঙ্গে এই বাণিজ্যিক লেনদেন কীভাবে হচ্ছে তা স্পষ্ট করা জরুরি। ড. মোয়াজ্জেম বলেন, এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ইপিবি ও রপ্তানিকারকদের মধ্যে একটি স্পষ্ট আলোচনা হওয়া দরকার—সরকার এই বিষয়টিকে কীভাবে দেখছে এবং ভবিষ্যতে কীভাবে এর সমাধান চায়।

এদিকে এই সময়ের মধ্যে ফিলিস্তিনেও বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে প্রায় ৪.৫ লাখ ডলারের পণ্য, যার বড় অংশই তৈরি পোশাক।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে