ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

বাংলাদেশের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব

২০২৫ এপ্রিল ১০ ১৫:২৫:৩১
বাংলাদেশের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব

ডুয়া ডেস্ক: বাংলাদেশের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটির প্রস্তাব অনুযায়ী, বর্তমান “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ” নামের পরিবর্তে “পিপলস ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ” রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে দলটির পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব তুলে দেওয়া হয়। ইসলামী আন্দোলনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহম্মেদ। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম এবং মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম। এসময় কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

কমিশনের কাছে দেওয়া মতামতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে ১৩০টিতে একমত, ২৫টিতে দ্বিমত ও ১১টিতে আংশিকভাবে একমত পোষণ করেছে। পাশাপাশি তারা ৪১টি নতুন প্রস্তাব এবং ৪টি মৌলিক প্রস্তাব দিয়েছে।

দলটির মৌলিক চারটি প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে জাতীয় পর্যায়ে আত্মশুদ্ধি ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান। প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, “আত্মশুদ্ধি ছাড়া সৎ, যোগ্য ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরি সম্ভব নয়।” তিনি বলেন, জবাবদিহিতা থাকতে হবে আল্লাহ, বিবেক, জনগণ এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।

তিনি আরও বলেন, বিদ্যমান আইন দিয়ে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও ধর্ষণের মতো অপরাধ দমন সম্ভব হয়নি। তাই শরিয়াহভিত্তিক আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। তার মতে, শরিয়াহ আইন সর্বজনীন এবং তা দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন নিশ্চিত করতে কার্যকর। বিএনপিও এ প্রস্তাবে একমত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচনব্যবস্থায়ও পরিবর্তন চায়। তারা চায় সব নির্বাচন অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে হোক। একইসাথে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও সরাসরি জনগণের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব করেছে দলটি।

বাংলাদেশের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আশরাফ আলী আকন বলেন, “আমরা চাই বাংলাদেশ একটি প্রকৃত জনকল্যাণ রাষ্ট্র হোক। তাই এমন একটি নাম প্রস্তাব করেছি, যা মানুষের মনে কল্যাণবোধ জাগিয়ে তোলে—‘পিপলস ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’।”

কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো সব দলের অংশগ্রহণে রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা একটি জাতীয় সনদ তৈরির চেষ্টা করছি। মতপার্থক্য থাকবে—এটাই স্বাভাবিক। তবে সবাইকে নিয়েই আমরা এগোতে চাই।”

তিনি জানান, আগামী ১২ এপ্রিল থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ চলবে এবং মে মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে প্রথম ধাপের আলোচনার কাজ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও আলোচনা হবে। পুরো প্রক্রিয়া আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সংবিধান, জনপ্রশাসন, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে। এখন পর্যন্ত ৩২টি দল কমিশনের কাছে মতামত জমা দিয়েছে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে