ঢাকা, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ৩০ চৈত্র ১৪৩১

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র

‘বাংলাদেশ থেকে ভুটান-নেপালে পণ্য রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হবে না’

২০২৫ এপ্রিল ০৯ ২০:৫৯:৩১
‘বাংলাদেশ থেকে ভুটান-নেপালে পণ্য রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হবে না’

ডুয়া নিউজ: পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। তবে এর ফলে বাংলাদেশ থেকে ভুটান-নেপালে পণ্য রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হবে না বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।

আজ বুধবার (০৯ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি। এ সময় ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের পেছনে কারণও ব্যাখ্যা করেন তিনি এই মুখপাত্র।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ‘রপ্তানির ক্ষেত্রে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পাশাপাশি একটি বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে, যাতে এই সিদ্ধান্তের বিয়ষটি পরিষ্কার করা হয়।’

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “বাংলাদেশকে এই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ার কারণে আমাদের বিমানবন্দর ও অন্যান্য বন্দরগুলোতে দীর্ঘ সময় ধরে ব্যাপক যানজট দেখা যাচ্ছে। লজিস্টিক সহায়তা পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে এবং ব্যয় বেড়ে গেছে। এতে করে আমাদের নিজেদের অর্থনীতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং বন্দরে অনেক পণ্য দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকছে। অতএব, ৮ এপ্রিল থেকে এই সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে।”

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) একটি নোটিশ জারি করে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের ঘোষণা দেয়। এতে করে এখন থেকে ভারতীয় বন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে পণ্য রপ্তানি করতে পারবে না বাংলাদেশ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, ২০২০ সালের জুন মাসে বাংলাদেশকে এই সুবিধা দিয়েছিল ভারত, যার আওতায় বাংলাদেশ ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর হয়ে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানি করতে পারত।

৮ এপ্রিল ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) এক নোটিশে জানিয়েছে, ২০২০ সালের ২৯ জুন জারি করা সার্কুলারটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে। তবে পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী ইতোমধ্যে ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশি কার্গোগুলোকে ভারতীয় ভূখণ্ড ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া হতে পারে।

এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এলো, যখন সম্প্রতি আমেরিকা ভারত, বাংলাদেশসহ একাধিক দেশের বিরুদ্ধে উচ্চহারে শুল্ক আরোপ করেছে।

কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীন সফর করেন এবং সেখানে ভারতের সংবেদনশীল এলাকা ‘চিকেনস নেক’ নিয়ে কথা বলেন। তার পরপরই এই বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত নিল ভারত।

ভারতের সাবেক বাণিজ্য কর্মকর্তা ও গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই)-এর প্রধান অজয় শ্রীবাস্তব ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে বলেন, “ভারত ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের স্বার্থকে সমর্থন করে আসছে এবং গত দুই দশক ধরে বিশাল ভারতীয় বাজারে বাংলাদেশি পণ্যগুলোতে (মদ ও সিগারেট বাদে) একমুখী ও শূন্য-শুল্ক প্রবেশাধিকার প্রদান করেছে।”

শ্রীবাস্তব আরও বলেন, “তবে চীনের সহায়তায় চিকেনস নেক এলাকার কাছে একটি কৌশলগত ঘাঁটি স্থাপনের বাংলাদেশের পরিকল্পনা নতুন এই পদক্ষেপকে উৎসাহিত করতে পারে। ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরের কাছে লালমনিরহাটে বিমানঘাঁটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বাংলাদেশ চীনা বিনিয়োগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।”

এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের ব্যয় বাড়বে, লজিস্টিক জটিলতা ও বিলম্ব ঘটবে এবং সামগ্রিকভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে