ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

গভর্নরের লন্ডন সফরের কারণ জানা গেল

২০২৫ এপ্রিল ০৯ ১৪:২১:৪০
গভর্নরের লন্ডন সফরের কারণ জানা গেল

ডুয়া ডেস্ক : প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, বাংলাদেশের চুরি হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রীয় অর্থ ফিরে পাওয়ার প্রচেষ্টায় গতি আনতে সম্প্রতি লন্ডন সফর করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মানসুর। বুধবার (৯ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সফরের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন তিনি।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, পাঁচ দিনের (১৭-২১ মার্চ) এই সফরে তিনি অংশ নিয়েছেন একাধিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ও কর্মশালায়, যেখানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল– অবৈধ অর্থ পাচাররোধ, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং ব্যবস্থা।

তিনি জানান, এ সফরের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিক ছিল বাংলাদেশ থেকে চুরি হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারের জন্য ব্রিটিশ সরকার ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে গভীর আলোচনা। লন্ডনের পার্লামেন্ট ভবনে অনুষ্ঠিত অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ (এপিপিজি) অন করাপশনের বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গভর্নর। সেখানে ব্রিটিশ এমপি, লর্ডস, দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার কার্যকর কৌশল।

সফরের কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, সফরের প্রথম অংশে গভর্নর চুরি হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারে যুক্তরাজ্যের সরকারি, বেসরকারি এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী এবং চুরি হওয়া সম্পদের অন্যতম গন্তব্য হওয়ায় এ সফর ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

১৭ মার্চ লন্ডনের পার্লামেন্ট ভবনে ‘অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ (এপিপিজি) অন করাপশন’ এর বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গভর্নর। এতে যুক্তরাজ্যের এমপি, লর্ডস, আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা এবং বাংলাদেশি প্রবাসী নেতারা অংশগ্রহণ করেন।

এ ছাড়া তিনি ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসে (এফসিডিও) এশিয়া বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট এমপির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

পরে ১৯ মার্চ লন্ডনে বাংলাদেশ অ্যাসেট রিকভারি সেমিনারে তিনি অংশগ্রহণ করেন। যেখানে ৩০টিরও বেশি আইন ও তদন্ত সংস্থা এবং ফান্ডিং প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। নতুন ‘অ্যাসেট রিকভারি অ্যাক্ট’ খসড়ার কাজ চলছে বলে জানান গভর্নর। একইসঙ্গে আল জাজিরা, ফিনান্সিয়াল টাইমস, গার্ডিয়ান ও ডেইলি মেইলসহ শীর্ষ স্থানীয় ব্রিটিশ গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারও দেন তিনি।

ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আরও বলেন, ১৮ থেকে ২১ মার্চ বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে চার দিনব্যাপী কর্মশালায় অংশ নেয় গভর্নরসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল। এতে ‘মোজালুপ’ পেমেন্ট সিস্টেমের সম্ভাব্য গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আলোচনা হয়। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অল্টারনেটিভ ফাইন্যান্সের (সিসিএএফ) সঙ্গে যৌথ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মানসুর। এজেন্ট ব্যাংকিং প্রসার এবং নতুন প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক সেবা নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশেও একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ সেন্টার ফর অল্টারনেটিভ অ্যান্ড ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

এই সফরে জিএসএম অ্যাসোসিয়েশনের (জিএসএমএ) সঙ্গে কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশে কিউআর কোড, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ও ক্যাশলেস অর্থনীতির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়।

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের (এলএসই) অধীন ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টারের (আইজিসি) সঙ্গে বৈঠকে গবেষণা সহযোগিতা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পরিবেশগত ঝুঁকি অন্তর্ভুক্তকরণ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিভাগ পুনর্গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয় বলেও জানান ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে