ঢাকা, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে নারী প্রার্থীদের জন্য দুঃসংবাদ

২০২৫ এপ্রিল ০৮ ১২:৪৫:৪৯
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে নারী প্রার্থীদের জন্য দুঃসংবাদ

ডুয়া ডেস্ক : সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে বড় পরিবর্তন আসছে। আগের মতো নারী, পুরুষ ও পোষ্য কোটাভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়া এবার থাকছে না। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, নতুন নিয়োগে কোটার পরিমাণ মাত্র ৭ শতাংশ হবে, আর বাকি ৯৩ শতাংশ নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে মেধার ভিত্তিতে সম্পন্ন করা হবে।

প্রস্তাবিত ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’-এর খসড়া অনুযায়ী, এই নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এই বিধিমালা চূড়ান্ত হলে আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮ হাজার ৪৩টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। তবে অবসরে যাওয়া শিক্ষক বাড়লে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

২০১৯ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালায় বলা হয়েছিল, সরাসরি নিয়োগযোগ্য পদের ৬০ শতাংশ মহিলা, ২০ শতাংশ পোষ্য এবং ২০ শতাংশ পুরুষ প্রার্থী দিয়ে পদ পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে অবশ্যই ২০ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

তবে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে হাইকোর্টের এক রায়ের ভিত্তিতে কোটা সংস্কার করা হয়। পরে সরকার ২৩ জুলাই একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে জানায়, সরকারি চাকরিতে এখন থেকে ৯৩ শতাংশ মেধা এবং ৭ শতাংশ কোটাভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হবে।

এই ৭ শতাংশ কোটার মধ্যে রয়েছে— বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, এবারও বিভাগ ধরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে, ঠিক যেমনটা করা হয়েছিল ২০২৩ সালের নিয়োগে। সেই সময় তিন ধাপে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল এবং ২০১৯ সালের কোটা ব্যবস্থায় ১৪ হাজার ৪৮৪ জন প্রার্থী নিয়োগ পেয়েছিলেন।

নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, এবার সহকারী শিক্ষক ছাড়াও সংগীত, শারীরিক শিক্ষা ও চারুকলায় শিক্ষক নিয়োগের জন্য পদ সৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যে- সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার জন্য ৫ হাজার ১৬৬টি পদ; চারুকলা বিষয়ের জন্য ৫ হাজার এর বেশি পদ।

সব মিলিয়ে এবার কমপক্ষে ১৮ হাজার নতুন পদে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে বলে আশা করছে অধিদপ্তর।

এছাড়া, সহকারী শিক্ষকদের জন্য ৯ হাজার ৫৭২টি সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ সৃষ্টির কাজও চলছে, যা পূরণ করা হবে পদোন্নতির মাধ্যমে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আশা করা হচ্ছে আগামী তিন মাসের মধ্যেই ‘নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ চূড়ান্ত করা যাবে। এরপর প্রশাসনিক সব প্রক্রিয়া শেষে আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ সম্ভব হবে।

এই নতুন নিয়মে নারীদের জন্য বরাদ্দকোটা উঠে যাওয়ায় চাকরিপ্রত্যাশী নারীদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, এই পরিবর্তনের মূল লক্ষ্য হলো মেধার ভিত্তিতে যোগ্যদের দিয়ে শিক্ষা খাতে মান উন্নয়ন নিশ্চিত করা।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে