ঢাকা, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১

এনজিওকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি

২০২৫ মার্চ ১৯ ১৭:৪০:৪৪
এনজিওকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি

ঢাবি প্রতিনিধি: কুমিল্লার চান্দিনায় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার দুই এনজিওকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনায় বুধবার (১৯ মার্চ) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশে কর্মরত প্রায় তিন শতাধিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, যুব প্ল্যাটফর্ম, নারী আন্দোলন, পরিবেশবাদী সংগঠন, মানবাধিকার সংগঠন, সামাজিক উদ্যোক্তা এবং গবেষকদের ঐক্যজোট সিএসও অ্যালায়েন্স। গতকাল মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তাদের জোর করে তুলে নিয়ে পুরুষ কর্মীকে গাছে বেঁধে বিদ্যুতের শক দেয়। আর নারী কর্মীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে। সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পরিবার থেকে টাকা আদায় করে।

সিএসও অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে বিবৃতিদাতারা হলেন রাশেদা কে চৌধুরী, ড. ইফতেখারুজ্জামান, শাহিন আনাম, মালেকা বেগম, আসিফ সালেহ, ফারাহ্ কবির, মনসুর আহমদ চৌধুরী, নোমান খান, খায়রুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, সালমা মাহবুব, কেএএম মোর্শেদ, সাঈদ আহমেদ প্রমুখ।

গণমাধ্যম সূত্রে প্রাপ্ত খবরে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতিদাতারা বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ওই কর্মীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনার পরেও অপরাধীদের আইনের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে কিনা তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এতবড় একটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে খাটো করে দেখার বা উপস্থাপনের চেষ্টা ভিকটিমদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে এবং সুরক্ষাকে শুধু হুমকির মুখেই ফেলবেনা বরং স্বাধীনতার পর পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে এদেশের কোটি কোটি সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখা লক্ষ লক্ষ এনজিওকর্মীর অবদানকে অগ্রাহ্য করার সামিল। এই ঘটনায় সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মাঠে ময়দানে কাজ করা সকল এনজিওকর্মীর জন্য নিরাপত্তার হুমকি সৃষ্টি হওয়ায় আমরা মর্মাহত, ক্ষুব্ধ। আমরা বিশ্বাস করি এদেশের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখা পৃথিবীব্যাপী সমাদৃত এনজিও কার্যক্রম ব্যহত হলে আমাদের অর্থনীতির চাকা মন্থর হবে।

কুমিল্লার চান্দিনার ঘটনায় সিএসও অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে–

১. দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

২. ভুক্তভোগীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে কিংবা নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ সৃষ্টি করে পুলিশি অভিযোগ দায়েরে যেকোনো গাফিলতি বা তথ্য গোপন করার চেষ্টার তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করতে হবে।

৩. গ্রামীণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে কাজ করা উন্নয়নকর্মীদের জন্য যথাযথ আইনি সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

৪. উন্নয়নকর্মীরা যেকোন সেক্টরের মতো এদেশের উন্নয়ন অংশীদার। তাঁরা যেন সহিংসতা বা হয়রানির ভয় ছাড়াই মাঠে ময়দানে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তা রাষ্ট্রকেই নিশ্চিত করতে হবে।

৫. নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার মামলাগুলো কঠোরভাবে নথিভুক্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে। এ ব্যাপারে অন্তবর্তী সরকারের গৃহীত সাম্প্রতিক উদ্যোগগুলো যথাযথ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং করতে হবে।

সবশেষে, নারী এনজিওকর্মীকে নগ্ন করে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিকে জঘন্য নারী নির্যাতন ও সহিংসতার অভিযোগ হিসেবে বিবেচনা করে বিবৃতিদাতাগণ তদনুসারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে