ঢাকা, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১

চিকিৎসা নিতে চীনে ছুটছেন বাংলাদেশিরা: রয়টার্স

২০২৫ মার্চ ১৯ ১৬:৪৭:১৪
চিকিৎসা নিতে চীনে ছুটছেন বাংলাদেশিরা: রয়টার্স

ডুয়া নিউজ : ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুৎ হয়ে ভারতে পলায়ন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী সরকারের পতনের পর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। তবে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতন ও রাজনৈতিক অস্থিরতার অযুহাতে বাংলাদেশিদের চিকিৎসা ভিসা ব্যতীত অন্য প্রায় সব ধরনের ভিসা প্রদান স্থগিত রেখেছে ভারত।

তবে সেই চিকিৎসা ভিসা প্রদানও কমে এসেছে। ২০২৩ সালে মোট ২০ লাখ বাংলাদেশিকে ভিসা দিয়েছিল ভারত। এই ভিসার একটি বড় অংশই চিকিৎসা ভিসা। সরকারি তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে প্রতি কার্যদিবসে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার বাংলাদেশিকে চিকিৎসা ভিসা দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে ২০২৪ সালের আগস্টের পর থেকে প্রত্যেক কার্যদিবসে ভিসা দেওয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ ১ হাজার বাংলাদেশি নাগরিককে। অর্থাৎ চিকিৎসাক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদান এক পঞ্চমাংশেরও বেশি হ্রাস পেয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসার জন্য বিকল্প খুঁজছেন বাংলাদেশিরা। অনেক বাংলাদেশিই এখন চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড-চীনের দিকে ঝুঁকছেন। ইতোমধ্যে চিকিৎসা সেবা নিতে চীনের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইউনানে গিয়েছেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

বাংলাদেশের এক কূটনীতিক এ তথ্যে সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, “যখন কোথাও শূন্যতা সৃষ্টি হয়, তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই অন্যকিছু দিয়ে তা পূরণ হয়। মানুষ প্রতিনিয়ত বিকল্প খোঁজে।”

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখাপাত্র জানিয়েছেন, “অতি সম্প্রতি চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ থেকে লোকজন আসছেন এবং চীন এই ব্যাপারটিকে দুই দেশের পারস্করিক ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির একটি চিত্র হিসেবে দেখতে আগ্রহী।”

রয়টার্সকে ওই মুখপাত্র বলেন, “বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে চীন ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। সেসবেরই একটি অংশ এই চিকিৎসা। ব্যাপারটি কিন্তু এমন নয় যে আমরা তৃতীয় কোনো দেশকে চাপে রাখতে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করছি; এমন কোনো উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য আমাদের নেই; বরং এ ব্যাপারটিকে বাংলাদেশি নাগরিকদের পর্যটনের একটি নতুন খাত হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।”

এ ইস্যুতে রয়টার্স ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও দুই দেশের কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুইটি কারণে মূলত বাংলাদেশিদের চিকিৎসা ভিসা প্রদানের সংখ্যা কমানো হয়েছে। প্রথমত, বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসে জনবলের ঘাটতি রয়েছে। তিনি জানান, আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিরাপত্তাজনিত কারণে ভারতীয় দূতাবাসের অনেক কর্মকর্তা দেশে ফিরে গেছেন। তাদের শূন্যস্থান এখনও পূরণ হয়নি।

দ্বিতীয়ত, অনেক বাংলাদেশি চিকিৎসা ভিসার অপব্যবহার করছেন। এসব অপব্যবহারকারীদের বেশিরভাগই আগের আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।

রয়টার্সকে ওই কর্মকর্তা আরও জানান, “বাংলাদেশে একটি স্থিতিশীল সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে ধীরে ধীরে ভিসা প্রদানের ব্যাপারটি স্বাভাবিক হবে বলে আমরা আশা করছি।”

সূত্র : রয়টার্স

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ খবর

স্বাস্থ্য - এর সব খবর



রে