ঢাকা, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১

লিবিয়ায় বাংলাদেশিদের অনাকাঙ্ক্ষিত আটক বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আহ্বান

২০২৫ মার্চ ১৯ ১৬:১৫:৪৬
লিবিয়ায় বাংলাদেশিদের অনাকাঙ্ক্ষিত আটক বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আহ্বান

ডুয়া ডেস্ক : আফ্রিকার আরব দেশ লিবিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশিদের অনাকাঙ্ক্ষিত আটক বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার।

সম্প্রতি লিবিয়ায় অবৈধ অভিবাসন সংকট মোকাবিলায় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল এমাদ মোস্তফা আল-তরাবলুসি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে এক যৌথ সভা করেন। এ সভায় রাষ্ট্রদূত এই আহ্বান জানিয়েছেন।

সভায় রাষ্ট্রদূত আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করে।

লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, সভায় লিবিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ অভিবাসনের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

তিনি এই সংকট সমাধানে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার, অবৈধ অভিবাসীদের প্রত্যাবাসন এবং মানব পাচার চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনার কথা জানান। এ লক্ষ্যে তিনি সংশ্লিষ্ট সকল দেশের সহযোগিতা কামনা করেন।

সভায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, সীমিত সম্পদের মধ্যেও বাংলাদেশ এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। তিনি লিবিয়ায় অনিয়মিত অভিবাসন সংকট মোকাবিলায় লিবিয়া সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেন।

রাষ্ট্রদূত আবুল হাসনাত বলেন, “বাংলাদেশ সবসময় নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও নিয়মিত অভিবাসনকে উৎসাহিত করে আসছে এবং বর্তমানে লিবিয়ায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি পেশাজীবী বিভিন্ন সেবা ও উন্নয়ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।”

তিনি আরও বলেন, “লিবিয়া বর্তমানে ইউরোপগামী অভিবাসীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট দেশ হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় কিছু সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের প্রলোভনে পড়ে অনিয়মিতভাবে লিবিয়ায় প্রবেশ করছে। বাংলাদেশ দূতাবাস এসব অনিয়মিত অভিবাসীদের দ্রুত দেশে প্রত্যাবাসনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে।”

আবুল হাসনাত জানান, “বাংলাদেশ সরকার মানব পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে। তি‌নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, সম্প্রতি ত্রিপলীসহ লিবিয়ার বিভিন্ন শহরে বাংলাদেশি নাগরিকদের অপহরণ করে মুক্তিপণের জন্য নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে।”

এ সময় রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশি নাগরিকদের অপহরণ বন্ধে লিবিয়ান সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

এছাড়া অনিয়মিত অভিবাসীদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সহজতর করতে ‘খুরুজ নিহায়ী’ (ওয়ান-স্টপ সার্ভিস) ব্যবস্থা আরও সহজ ও কার্যকর করার অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত। একই সঙ্গে লিবিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশিদের অনাকাঙ্ক্ষিত আটক বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত হাসনাত লিবিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টার বিশেষ করে বির আল-ঘানাম ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশিদের দূতাবাসের পক্ষ থেকে দ্রুত পরিদর্শনের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানান।

রাষ্ট্রদূত লিবিয়ায় অনিয়মিত অভিবাসন ও মানব পাচারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে লিবিয়া সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বাংলাদেশি অভিবাসীদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে লিবিয়া সরকারের ধারাবাহিক সহযোগিতার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি মানব পাচার প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে দূতাবাসের কার্যকর সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

প্রবাস এর সর্বশেষ খবর

প্রবাস - এর সব খবর



রে