ঢাকা, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

আওরঙ্গজেবের সমাধি সরানো নিয়ে সংঘর্ষ; মু'সলিমদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা

২০২৫ মার্চ ১৮ ২২:৫৪:০৭
আওরঙ্গজেবের সমাধি সরানো নিয়ে সংঘর্ষ; মু'সলিমদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা

ডুয়া ডেস্ক: ‘চাভা’ নামের একটি বলিউড সিনেমাকে কেন্দ্র করে ভারতে হিন্দুত্ববাদী ও মুসলমানদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মুসলিম সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধিস্থল সরানোর দাবিতে ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরে গত কয়েকদিন ধরে অস্থিরতা তৈরি করছিল কট্টর উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দলের সমর্থকরা। গতকাল সোমবার (১৭ মার্চ) তারা সেখানে সম্রাট আওরঙ্গজেবের ছবি ও সবুজ একটি কাপড় পোড়ায়। ওই সময় গুজব ছড়ায় সবুজ কাপড়ে কোরআনের আয়াত লেখা আছে। এরপরই সেখানে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্গে মুসলিমদের সংঘর্ষ তৈরি হয়। ওই সময় ৩০ থেকে ৪০টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। সহিংসতায় আহত হন বেশ কয়েকজন।

এ ঘটনার পর মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ও হিন্দুবাদী দল বিজেপির নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ বলেন, ‘এই সংঘাত পরিকল্পিত।’

এর আগে দেবেন্দ্র ফড়নবিশ নিজেও আওরঙ্গজেবের সমাধিস্থল সরানোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে বক্তব্যও দিয়েছিলেন তিনি।

বিধানসভায় বিজেপির এই নেতা বলেন, “নাগপুরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দল বিক্ষোভ আয়োজন করে। গুজব ছড়ায় যে ধর্মীয় বিষয় থাকা কোনো কিছু পোড়ানো হয়েছে… দেখে মনে হচ্ছে এটি ছিল বেশ পরিকল্পিত হামলা। নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই।”

তিনি আরও বলেন, “পুলিশের ওপর হামলা সহ্য করা হবে না। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ সিন্ধে এই সহিংসতাকে ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “এ ধরনের বর্বরতা (এখানে) এর আগে দেখা যায়নি। বিক্ষোভকারীরা ছত্রপতি সম্ভাজি মহারাজের গৌরবের জন্য বিক্ষোভ করছে। যারা আওরঙ্গজেবকে সমর্থন করেন তাদের ‘চাভা’ ছবিটি দেখা উচিত। আমার বিশ্বাস সত্যিকারের দেশপ্রেমিক মুসলিমরাও আওরঙ্গজেবকে সমর্থন করবেন না।”

প্রসঙ্গত, ‘চাভা’ নামে একটি ছবিতে আওরঙ্গজেবকে ভিলেন হিসেবে দেখানো হয়। এরপরই তার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে কট্টর হিন্দুত্বাবাদীরা। তারা নাগপুর থেকে এখন সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি সরিয়ে নেওয়ার দাবি করছেন। যিনি ৩০০ বছর আগে মারা গিয়েছিলেন।

তবে মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলীয় নেতা ও শিব সেনার (ইউবিটি) প্রধান, উদ্ভব ঠাকরে সরকারের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন। পাশাপাশি তিনি হিন্দুত্ববাদী আরএসএসকেও সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন।

সহিংসতার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রী নই, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও নই। এই সহিংসতার পেছনে কারা দায়ী, সেটা মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশকে জিজ্ঞেস করুন। কারণ নাগপুরে আরএসএসের সদর দপ্তর রয়েছে। মহারাষ্ট্রে এখন দুটি ইঞ্জিনের সরকার রয়েছে। যদি তারা ব্যর্থ হয় তবে তাদের উচিত পদত্যাগ করা।”

মুঘল সাম্রাজ্যের ষষ্ঠ সম্রাট আওরঙ্গজেব ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম। তিনি শরিয়া আইন চালু করেছিলেন এবং তাকে "সর্বশেষ কার্যকর মুঘল সম্রাট" বলা হয়।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে