ঢাকা, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে ফের ঘাটতি বাড়ছে

২০২৫ মার্চ ১২ ১০:২৪:৫৫
বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে ফের ঘাটতি বাড়ছে

ডুয়া নিউজ: দেশের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব আবারও ঋণাত্মক ধারায় ফিরেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) এই ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৫ কোটি ডলার, যা গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল ৫.৫ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, জানুয়ারি মাসে আমদানি বেড়ে যাওয়ায় এবং ডলারের বহির্গমন বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে।

সাধারণত, চলতি হিসাবের মাধ্যমে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার আয়-ব্যয়ের সার্বিক চিত্র প্রতিফলিত হয়। যদি আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হয়, তাহলে এই হিসাবে ঘাটতি দেখা দেয়, যা পূরণ করতে বৈদেশিক ঋণ নিতে হয়। সংশ্লিষ্টরা জানান, জানুয়ারি মাসে রমজান সামনে রেখে আমদানির পরিমাণ অনেক বেড়েছে, যার ফলে ডলারের ব্যয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে চলতি হিসাবের ঘাটতি ছিল ৬৬১ কোটি ডলার, আর তার আগের বছর এই ঘাটতি ছিল ১,১৬৩ কোটি ডলার। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আগস্টে সাময়িকভাবে এই খাতের ভারসাম্য ইতিবাচক হলেও সেপ্টেম্বরে আবার নেতিবাচক ধারা দেখা দেয়। ডিসেম্বর মাসে তা আবার ইতিবাচক হলেও জানুয়ারিতে পুনরায় ঘাটতিতে পড়ে।

আমদানি-রপ্তানি ও বাণিজ্য ঘাটতির পরিসংখ্যান

চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৩,৮১১ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩.৩০ শতাংশ বেশি। জানুয়ারি মাসে রেকর্ড পরিমাণ আমদানির এলসি খোলা হয়, যার পরিমাণ ৬১৩ কোটি ডলার। অন্যদিকে, একই সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ২,৬৩৬ কোটি ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। তবে আমদানি ব্যয় বেশি হওয়ায় সাত মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১,১৭৪ কোটি ডলার, যা গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল ৯৭৬ কোটি ডলার।

আর্থিক হিসাবের উদ্বৃত্ত কমছে

এ সময় আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত কমে ৮৫ কোটি ডলারে নেমে এসেছে, যা ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল ১১৮.৭০ কোটি ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে আর্থিক হিসাবের উদ্বৃত্ত ছিল ৪৫৪ কোটি ডলার, তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরুতে এই হিসাবে ঘাটতি দেখা দেয়। সাধারণত, আর্থিক হিসাবে ঘাটতি হলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি হয় এবং ডলার সংকট তীব্র হয়ে ওঠে।

সামগ্রিক লেনদেনেও ঘাটতির প্রবণতা

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে সামগ্রিক লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১৭ কোটি ডলার, যা গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল ৪১.২০ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৪৬৮ কোটি ডলার।

অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চলতি হিসাব ও আর্থিক লেনদেনের ভারসাম্য রক্ষায় বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নতুন উৎস খুঁজতে হবে এবং আমদানি খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অন্যথায় ডলারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে