ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১

মাউশিতে দুদকের অভিযান; যা পাওয়া গেল

২০২৫ মার্চ ১১ ২২:১৩:২৮
মাউশিতে দুদকের অভিযান; যা পাওয়া গেল

ডুয়া নিউজ : বিভিন্ন সেক্টরে চলমান রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযান। এবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের (মাউশি) রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালক (ডিডি) ড. আলমগীর কবিরের দপ্তরে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দুদকের একটি টিম মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয়ে অভিযান চালায়। এ সময় তারা সেখানে ১৫১টি ফাইল পেয়েছেন।

ফাইলগুলোর মধ্যে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকদের নতুন এমপিওভুক্তির আবেদন, কলেজের এরিয়া বিল, ছুটি এবং বিদেশ ভ্রমণের এনওসির আবেদন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফাইল কলেজের এরিয়া বিল সম্পর্কিত। ইতোমধ্যে আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে মাউশিতে ফাইল পাঠানোর নির্ধারিত সময়সীমা পার হয়ে গেছে। তবুও ১৫১টি ফাইল এখনও ডিডির টেবিলেই পড়ে আছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ১০ মার্চ দুদকের হটলাইনে এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন যে, মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয়ের কলেজ শাখার ডিডি আলমগীর কবির যোগদানের পর থেকেই ঘুষ নিয়ে ফাইল অনুমোদন করছেন। এমপিওভুক্তি এবং বদলির ক্ষেত্রে তিনি লাখ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন। ঘুষ না দিলে ফাইল উপরে ওঠে না। ছুটি কিংবা অনাপত্তিপত্রের জন্যও তিনি ঘুষ দাবি করেন, এবং তার চাহিদামতো টাকা না দিলে ফাইল অনুমোদন করেন না।

এ অভিযোগের পরদিন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক ফজলুল বারী এনফোর্সমেন্ট টিমের লিডার হিসেবে জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেনকে নিয়োগ দেন। টিমের সদস্য হিসেবে যুক্ত করা হয় সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ সিদ্দিক, উপসহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন এবং কোর্ট পরিদর্শক আশরাফুল ইসলামকে। তারা অভিযানে অংশ নেন।

এ সময় দুদক দল দেখতে পায়, আলমগীর কবিরের টেবিলে আটকে আছে ১৫১টি ফাইল। এসব ফাইল প্রথমে পরিচালক মোহা. আছাদুজ্জামানের কাছে দাখিল হয়েছিল। তারপর তিনি সেগুলো সহকারী পরিচালক আলমাস উদ্দিনের কাছে পাঠান। আলমাস উদ্দিন তা উপপরিচালক আলমগীর কবিরের কাছে পাঠিয়েছিলেন। তবে আলমগীর কবির পরে আর ফাইলগুলো অগ্রগামী করেননি। যদি তিনি ফাইলগুলো অগ্রগামী করতেন। তবে পরিচালক তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঢাকায় পাঠাতে পারতেন।

দুদকের দলের কাছে আলমগীর কবির দাবি করেন, 'অসুস্থ অবস্থায় ছুটিতে থাকায় এবং তিন দিন সার্ভার ডাউন থাকায় তিনি ফাইল ছাড়তে পারেননি। দুদকের দল এ সময় তার কাছে লিখিত বক্তব্য চান। লিখিত বক্তব্য দিতে আগামী রোববার পর্যন্ত সময় নেন ডিডি আলমগীর।'

মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক মোহা. আছাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, "আমার কাছে ফাইল আসার পর আমি সর্বোচ্চ ১০ দিন রাখতে পারি। সহকারী পরিচালক সাতদিন এবং উপপরিচালক পাঁচদিন রাখতে পারেন। কিন্তু উপপরিচালক যথা সময়ে ফাইল ছাড়েন না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঢাকায় ফাইল পাঠানো সম্ভব হয় না। তার কাছে মোট ২৮২টি ফাইল ছিল। তার মধ্যে ১৭৪টি আটকে রেখেছিলেন। ঢাকায় পাঠানোর সময় শেষে তিনি ২৩টা ফাইল আমাকে দিয়েছেন। এসব ফাইল আর এখন নিয়ে আমার কোনো লাভ নেই, ঢাকায় পাঠানো যাবে না। আর ১৫১টি ফাইল তো তিনি ছাড়েননি।"

এ বিষয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, তিনি (ডিডি) ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। কোন তারিখে কোন ফাইল এসে আটকে আছে সেগুলো দেখেছি। আমরা পেয়েছি যে ১৫১টি ফাইল আটকে আছে। এ ব্যাপারে ডিডির লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। তিনি রোববার পর্যন্ত সময় চেয়েছেন। জবাব আসার পরে পর্যালোচনা করে আমরা ঢাকায় প্রতিবেদন পাঠাব।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে