ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

দেশব্যাপী লাগাতার ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি

ঢাবির লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন ও বিক্ষোভ 

২০২৫ মার্চ ০৯ ১৩:৩৮:২৫
ঢাবির লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন ও বিক্ষোভ 

ঢাবি প্রতিনিধি : দেশে চলমান লাগাতার ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনায় ধর্ষকদের উপযুক্ত শান্তি নিশ্চিতকরণ এবং দেশব্যাপী যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা৷ একই সাথে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শান্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবিতে মৌন মিছিল করেছে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।

রোববার (৯ মার্চ) বেলা সোয়া ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সমাবেশে মিলিত হয়।

এসময় শিক্ষার্থীরা- ‘We want we want, Justice Justice’, ‘we want Justice, hang the rapist’; ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাই নাই’; ‘তুমি কে আমি কে, আসিয়া আসিয়া’; ‘আমার বোন তোমার বোন, আসিয়া আসিয়া’; ‘আমার বোনের কান্না, আর না আর না’; ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে কবর দে’; ‘রশি লাগলে রশি নে, ধর্ষকদের ফাসি দে’; ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও'; ‘২৪ এর বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাই নাই’; ‘জাহাঙ্গীর করে কি? খায় দায় ঘুমায় নাকি?’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ মিছিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা লাসনা কবির, অধ্যাপক আবু হুসাইন মোহাম্মদ আহসান এবং প্রভাষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শেহরিন আমিন ভূইয়া একাত্মতা পোষণ করে মিছিলে অংশ নেন।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে লোক প্রশাসন বিভাগের ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাকিবুল বাশার বলেন, আগের সরকার কিভাবে পালিয়েছে সেটাকে ভুলে যাবেন না। আপনি রাত ৩টায় এসে আমাদেরকে সিরিয়াসনেস বুঝাবেন না। আমরা রাস্তায় সিরিয়াসনেস দেখতে চাই। আমাদের মা বোনদের নিরাপদ দেখতে চাইম আমরা এত প্যাচ দেখতে চাই না৷ যে মানুষ বাচ্চার প্রতি রহম করতে পারে না তার প্রতি আমাদের কিসের রহম? এসব ধর্ষকদের প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। এখানে কোনো হিউম্যান রাইটসের কথা বলা যাবে না।

লোক প্রশাসন বিভাগের ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থী তুয়াম্মুম কবির বলেন, আমরা এই ধর্ষকদের ১ মিনিটের ফাঁসি চাই না। আরও কঠিন শাস্তি কার্যকর করতে হবে৷ একজন ধর্ষিতা বোন যেমন কষ্ট সহ্য করে এদের তারচেয়ে কঠিন শাস্তির মাধ্যমে মৃত্যু নিশ্চিত করতে হবে৷ আমরা বিভাগের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলতে চাই, ধর্ষণের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় বসবো না। আমরা লাগাতার আন্দোলন করে যাবো।

লোক প্রশাসন বিভাগের প্রভাষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শেহরিন আমিন ভূইয়া বলেন, আমরা শুধু আইনের কথা বলি, রুলসের দোহাই দেই। কিন্তু এই রেপিস্টদের শাস্তি দিতে ১০ দিনের বেশি সময় লাগার কথা না। দ্রুত ট্রাইবুন্যাল গঠন করে অতি দ্রুত প্রকাশ্য শাস্তি কার্যকর করতে পারলে ধর্ষণের পরিমাণ কমে আসবে৷

লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক আবু হুসাইন মোহাম্মদ আহসান বলেন, আমাদের প্রতিবাদ প্রতিনিয়ত জানাতে হবে। এটা কীটের মতো রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে৷ এটাকে সমূলে উৎপাত করতে হবে। আমরা দায়িত্ব হাতে নিতে চাই না৷ কিন্তু এর বিকল্প নেই। সরকার যদি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে শিক্ষার্থীরা আবার মাঠে নামবে৷ শুধু আসিয়া না, যত রেপ এর ঘটনা ঘটেছে সবগুলোর বিচার করতে হবে৷

লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা লাসনা কবির বলেন, আমরা কখনো দৃষ্টান্তমূলক কোন শাস্তি এখন পর্যন্ত দেখতে পাইনি। আমরা যদি ধর্ষকদের উপযুক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারি তাহলে ধর্ষকরা ভয় পেয়ে আর অপরাধ করবে না। আমরা বলতে চাই, এই ধর্ষকরা পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। পশুরা অন্তত তাদের বাচ্চাদের সাথে এসব করে না। কিন্তু আমাদের ছোট মেয়ে আসিয়াকেও তারা ছাড় দেয়নি। আমরা যেনো এই ঘটনাগুলো ভুলে না যাই। আমরা ভুলে যাই বলেই ধর্ষকরা কদিন পরপর তাদের রূপ দেখায়৷

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

বিশ্ববিদ্যালয় এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ববিদ্যালয় - এর সব খবর



রে