ঢাকা, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে আতঙ্কে লক্ষাধিক প্রবাসী

২০২৫ মার্চ ০৭ ১৫:৩০:৫৩
যুক্তরাষ্ট্রে আতঙ্কে লক্ষাধিক প্রবাসী

ডুয়া ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেস অতিরিক্ত বরাদ্দের বিল অনুমোদনের পর অবৈধ অভিবাসী গ্রেফতার ও বহিষ্কারের প্রক্রিয়া আরও কঠোর হয়েছে। এর ফলে নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, নিউজার্সি, মিশিগান, ইলিনয়, আলাবামা, পেনসিলভেনিয়া, টেক্সাস, ম্যাসাচুসেটস, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া ও ওয়াশিংটন মেট্রো এলাকায় সহ বিভিন্ন স্থানে লক্ষাধিক অভিবাসী চরম অস্বস্তির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। কারণ তাদের বিরুদ্ধে বহু বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের আদেশ জারি করা হয়েছিল। এর মানে তারা আইনি লড়াইয়ের পরও স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাননি।

এছাড়া হাজার হাজার শিক্ষার্থীও এই পরিস্থিতিতে পড়েছেন যারা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসে পড়াশোনা করতে পারেননি। তাদের ভিসা বাতিল হয়ে যাওয়ার পর অনেকেই রাজনৈতিক আশ্রয় বা ইউএস সিটিজেনের সাথে বিয়ের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন। তবে খুব কম সংখ্যকই সফল হয়েছেন।

বর্তমানে ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত ব্যক্তিরা পরিবার-পরিজনসহ বিপদসংকুল পরিস্থিতিতে আছেন। তারা বেশিরভাগ সময় রেস্টুরেন্ট, মুদির দোকান, নিউজ স্ট্যান্ড বা নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পর থেকেই তারা গ্রেফতার এড়াতে বাসা বা কর্মস্থল পাল্টাচ্ছেন। নিউইয়র্ক, লসএঞ্জেলেস, ফিলাডেলফিয়া এবং বস্টনের মতো স্যাঙ্কচুয়্যারি সিটিতে আইসের অভিযান শুরুর পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্যাঙ্কচুয়্যারি সিটির বিরুদ্ধে এক কঠোর নীতি অবলম্বন করেছেন। যেখানে বলা হয়েছে যদি ওই সিটি আইসের অভিযানে সহায়তা না করে তাহলে ফেডারেলের সব মঞ্জুরি বাতিল করা হবে। এতে কোন সিটিই ঝুঁকি নিতে চায়নি।

তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সঠিক সংখ্যা জানা সম্ভব নয়। কারণ অনেকেই মেক্সিকো বা কানাডা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছেন এবং বিভিন্ন নামে ইমিগ্রেশনে আবেদন করেছিলেন। এর ফলে সংখ্যাগত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের আদালত থেকে বহিষ্কারের আদেশ পাওয়া অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা এক কোটি ৪০ লাখের বেশি। তবে ট্রাম্প নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, কেবলমাত্র গুরুতর অপরাধী ও ফেরার জীবনযাপনকারী অভিবাসীদের গ্রেফতার ও বহিষ্কার করার কথা বলেছিলেন কিন্তু বাস্তবে এই অভিযান বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ অভিবাসীদেরও গ্রেফতার করছে।

এই সাঁড়াশি অভিযান অনেকের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে এবং সম্প্রতি ফাস্টফুড দোকান এবং কমিউনিটি ভিত্তিক রেস্টুরেন্টগুলোতে কর্মচারীর সংখ্যা কমে গেছে। এমনকি বিভিন্ন ব্যবসায়ী বলছেন, তাদের দোকানে ক্রেতা সংকট তীব্রভাবে বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে অভিবাসী সম্প্রদায় গ্রেফতার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে, অনেকেই তাদের ফোন নম্বর বদলে ফেলছেন। কারণ শোনা যাচ্ছে আইস তাদের সেলফোনের মাধ্যমে টার্গেটেড অবৈধদের খোঁজ পেতে সাহায্য করছে।

২১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানটি এখনও পর্যন্ত কতজন বাংলাদেশি গ্রেফতার হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তবে কম্যুনিটি ও ইমিগ্রেশন এটর্নির সূত্র মতে, সেই সংখ্যা অর্ধ শতাধিকের বেশি হবে না। একই সময়ে কয়েকশত প্রবাসী আতঙ্কে বাংলাদেশে ফিরে গেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।

এদিকে ৮৫ বিলিয়ন ডলারের একটি নতুন বিল কংগ্রেসে পাশ হয়েছে। যার বেশিরভাগ অর্থ অবৈধ অভিবাসী গ্রেফতার ও বহিষ্কারের অভিযান জোরদারে ব্যয় করা হবে। তবে এই অর্থও যথেষ্ট মনে হচ্ছে না। কারণ গ্রেফতারের পর প্রবাসীদের নিজ দেশে পাঠানোর জন্য বিমান ভাড়া এবং থাকার খরচ বহন করতে হচ্ছে ফেডারেল সরকারকে। যার জন্য আরও বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন রয়েছে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

প্রবাস এর সর্বশেষ খবর

প্রবাস - এর সব খবর



রে