ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

চা-রুটিতেই চলছে সেহরি-ইফতার, ঘরে নেই খাবার

২০২৫ মার্চ ০৫ ১৫:১৩:৫৮
চা-রুটিতেই চলছে সেহরি-ইফতার, ঘরে নেই খাবার

ডুয়া ডেস্ক: পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কুররাম জেলার সদর দপ্তর পারাচিনারে রাস্তা বন্ধের প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভ তৃতীয় দিনে পৌঁছেছে। স্থানীয়রা প্রাদেশিক সরকারের কাছে পরিবহন রুট খুলে দেওয়ার এবং জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।

বিবিসি উর্দুর খবর অনুযায়ী, পারাচিনার এবং তার আশপাশের গ্রামগুলো গত পাঁচ মাস ধরে পাকিস্তানের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এর ফলে খাদ্য ও মৌলিক প্রয়োজনীয়তার তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, রমজান মাসের শুরু থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ ইফতার করার জন্য খেজুর পাচ্ছেন না এবং সেহরি ও ইফতারে তারা শুধু চা ও রুটি খেয়ে দিন পার করছেন।

যদিও খাইবার পাখতুনখোয়া সরকার খাদ্যসামগ্রী এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্য পাঠানোর জন্য কনভয় পাঠানোর চেষ্টা করছে কিন্তু কনভয়গুলোর উপর বারবার হামলা হওয়ার কারণে সেগুলো থমকে গেছে। ২০২৪ সালের অক্টোবরে যাত্রীবাহী কনভয়গুলোর উপর ধারাবাহিক হামলার ফলে কুররামের পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটেছিল। এর ফলে অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল এবং বহু বাড়িঘর ও দোকানপাট পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর থেকে ওই এলাকাতে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সংকট আরও তীব্র হয়েছে।

এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কড়াকড়ি নিরাপত্তা দিয়ে ত্রাণ সামগ্রী পাঠাচ্ছে কিন্তু সেগুলোর উপরও হামলা হচ্ছে এবং বেশ কয়েকজন ট্রাক ড্রাইভার অপহৃত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, পণ্যবাহী ট্রাকের কনভয় খুব কমই কুররামে পৌঁছায় কারণ বেশিরভাগ যানবাহন আটকে দেওয়া হয়।

কুররামের বাসিন্দারা জানান, এই পরিস্থিতির কারণে তাদের বাজারে সবজি ও ফলমূলের দাম অত্যন্ত বাড়িয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ মাস ধরে এই এলাকায় পেট্রোল-ডিজেলের জোগান ব্যাহত হয়েছে এবং রমজান মাসে কালোবাজারে পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। যদিও এর পরিমাণও খুব সীমিত।

কুররামের সমাজকর্মী মুসারাত বাঙ্গাশ জানান, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে মানুষের মধ্যে বড় ধরনের উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, সরকার এই সংকট মোকাবিলায় পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। অতীতে তার পরিবার রমজান মাসে বড় টেবিল নিয়ে ইফতার আয়োজন করত কিন্তু এবারে পরিস্থিতি পুরোপুরি ভিন্ন। সেহরি ও ইফতার চা ও রুটির সঙ্গে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। গরিব মানুষদের ঘরে খাবারের কিছুই নেই। শুধুমাত্র কিছুটা দুধ ও গম পাওয়া যায় তবে তার পরিমাণও খুব কম।

বিক্ষোভকারী মালিক জারতাজ বিবিসিকে জানিয়েছেন, তারা সরকারের প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন এবং রাস্তা না খোলা পর্যন্ত তাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। পারাচিনারের সিনিয়র সাংবাদিক আলী আফজাল মন্তব্য করেছেন, রমজান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কুররামের জনগণের ধৈর্য্য চূড়ান্তভাবে ভেঙে গেছে এবং সেখানে খাদ্য সামগ্রীর তীব্র ঘাটতি চলছে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে