ঢাকা, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১

যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায়

২০২৫ মার্চ ০২ ১২:৪১:৫১
যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায়

ডুয়া ডেস্ক : মুমিনদের জন্য রমজান হল জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার। এটি আত্মশুদ্ধি ও আত্মসংযমের মাধ্যমে আত্মউন্নয়নের চেতনা তৈরি করে, যা জীবনে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে। রমজান আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতের অফুরান ভাণ্ডার নিয়ে আসে।

প্রিয় নবী (সা.) এই মাসকে ‘শাহরুন আজিম’ অর্থাৎ মহান সম্মানিত মাস এবং ‘শাহরুম মোবারক’ অর্থাৎ বরকতময় মাস হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

নবী কারিম (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে রমজানের রোজা রাখবে এবং সওয়াবের আশায় এটি করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করা হবে। এবং যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে রমজানে কিয়াম করবে, অর্থাৎ তারাবির নামাজ আদায় করবে, তারও পূর্ববর্তী গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে শবেকদরে রাত জেগে নামাজ আদায় করবে, তার পূর্ববর্তী গুনাহগুলো মাফ করা হবে।” (বোখারি শরিফ ১/২৫৫, মুসলিম শরিফ ১/২৫৯, মেশকাত শরিফ ১/১৭৩)

অনেক কারণে রোজা ভেঙে যায় যা আমাদের অনেকেরই অজানা। চলুন রোজা রোজা ভঙ্গের কারণগুলো জেনে নেওয়া যাক-

> রোজা অবস্থায় যদি অসুস্থতার কারণে ইনহেলার (Inhaler) ব্যবহার করা হয়, তবে রোজা ভেঙে যাবে (শামি ৩/৩৬৬)। এছাড়া, রোজা অবস্থায় যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে বা মুখে বমি চলে আসার পর তা পরিমাণে অল্প হলেও ইচ্ছাকৃতভাবে গিলে ফেলে, তবুও রোজা ভেঙে যাবে (মুসান্নাফে আব্দুর রাজজাক ৪/১৯৭)।

> যদি নাক দিয়ে রক্ত বের হয়ে মুখে চলে আসে, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে (তাতারখানিয়া ৩/৩৮৩)। রোজাদার যদি মুখে পানি রেখে ঘুমিয়ে পড়ে এবং সুবহে সাদিকের সময় পানি কিছুটা পেটে চলে যায়, তবে তার রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা করতে হবে, তবে কাফফারা দেওয়ার প্রয়োজন নেই (শামি ৩/৩৭৪)।

> কুলি করার সময় যদি অনিচ্ছাকৃত পানি গলা দিয়ে পেটে চলে যায় তাহলে রোজা কাজা করতে হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না। আর যদি রোজার কথা স্মরণই না থাকে, পানি মুখে নিয়ে খেয়ে ফেলে তাহলে রোজা ভাঙবে না (তাতারখানিয়া ৩/৩৭৮)।

> নাক অথবা কানের মধ্যে তেল দেওয়ার দ্বারা রোজা ভেঙে যাবে। তবে কাফফারা ওয়াজিব হবে না (হেদায়া ১/২২০)।

> যদি কোনো ব্যক্তি কারও ধমকের কারণে অথবা ভুল করে যেমন রোজার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার করে অতঃপর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে ইচ্ছা করে পানাহার করল, তাহলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে এবং কাজা করা জরুরি (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ৬/১৪৯)।

> পাথরের কণা, মাটি, ঘাস, কাগজ ইত্যাদি মোটকথা যা সাধারণ আহারযোগ্য নয় বা কোনো উপকারে আসে না তা খেলেও রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা করতে হবে (বাযযাযিয়া, ৪/৯৯)।

> দাঁত থেকে রক্ত বের হয়ে যদি থুতুর সঙ্গে ভেতরে চলে যায়। আর রক্তের পরিমাণ যদি থুতুর সমান বা বেশি হয় তাহলে রোজা ভেঙে যাবে (বোখারি ১/২৬০)। বিড়ি সিগারেট, হুঁকা পান করলে রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা করা জরুরি (শামি ৩/৩৬৬)।

> কঠিন অসুস্থতার ফলে যদি কোনো মানুষ রোজা ভেঙে ফেলে, তাহলে শুধু কাজা করতে হবে। কাফফারা দেওয়া লাগবে না (তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/১৮৯)।

> যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত রোজা ভেঙে ফেলে অতঃপর খুব অসুস্থ হয়ে যায় অথবা কোনো নারীর প্রিয়ড হয়, তাহলে শুধু কাজা করতে হবে। কাফফারা দেওয়া লাগবে না (হিন্দিয়া ১/২০৬)।

> রোজা অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে তার স্বামী জোর করে সহবাস করলে স্ত্রীকে শুধু কাজা আদায় করতে হবে। কাফফারা নয় (তাতারখানিয়া ৩/৩৯৪)।

> রোজা অবস্থায় সফর করলে কোনো কারণ ছাড়া রোজা ভেঙে ফেলা অনুচিত। যদি ভেঙে ফেলে, তবে শুধুমাত্র কাজা করতে হবে, কাফফারা নয় (আলমগিরি ১/২০৬)।

> যদি কোনো পুরুষের প্রস্রাবের পথে ওষুধ দেওয়া হয় এবং তা অণ্ডকোষ পর্যন্ত পৌঁছায়, তবে রোজা ভেঙে যাবে, অন্যথায় নয় (তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/১৮৩)। কোনো নারীর লজ্জাস্থানে ওষুধ লাগানোর সঙ্গে সঙ্গেই রোজা ভেঙে যাবে (বাহরুর রায়েক ২/৪৮৮)।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

লাইফস্টাইল এর সর্বশেষ খবর

লাইফস্টাইল - এর সব খবর



রে