ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ও প্রশাসনকে ‘লাল কার্ড’ দেখাল সাধারণ শিক্ষার্থীরা

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২০ ১৭:৪৬:১১
কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ও প্রশাসনকে ‘লাল কার্ড’ দেখাল সাধারণ শিক্ষার্থীরা

ডুয়া নিউজ : খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতি ও প্রশাসনকে লাল কার্ড দেখিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। এসময় তারা রাজনীতিমুক্ত কুয়েট ক্যাম্পাস ও ভিসি, প্রোভিসি এবং ডিএসডাব্লুর (ছাত্রবিষয়ক পরিচালক) পদত্যাগ দাবি করেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার নিকট লিখিত আবেদন করার তথ্যও জানান।

আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ প্রদর্শনকালে তারা লাল কার্ড প্রদর্শন ও এসব দাবি জানান।

এদিকে, কুয়েটের সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে তদন্ত কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি বলছেন, “পদত্যাগ ছাড়া ছাত্রদের সকল দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে, আশা করছি ছাত্ররা সকলেই দ্রুত ক্লাসে ফিরবে।”

শিক্ষার্থীরা জানান, তারা ক্যাম্পাসে কোনোপ্রকার ছাত্ররাজনীতি চান না। তাদের নামে নানা ধরনের প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানো হচ্ছে যে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবির, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মী। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা কোনো ছাত্ররাজনীতির সাথে জড়িত নয়। তারা কুয়েট ক্যাম্পাসে কোনো রাজনীতি ও সন্ত্রাস চান না।

তারা জানায়, তাদের ছয় দফা দাবি লিখিত আকারে ক্যাম্পাসের সকল শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষরসহ প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হবে। এতে ছাত্রদের ওপর হামলা চালানোর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে কুয়েটের ভিসি, প্রো ভিসি ও ডিএসডাব্লু পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন ভিসি, প্রো ভিসি ও ডিএসডাব্লু নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালু করার দাবি জানানো হয়।

এ সময় ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলা ও ব্যর্থতা তুলে ধরেন।

এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং সুষ্ঠু তদন্তে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা।

তদন্ত কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. এমএমএ হাসেম বলেন, “আমরা তদন্ত শুরু করেছি। আমাদের কাছে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত আসছে। কিন্তু আমরা রুমের অভাবে আসলে সঠিকভাবে তদন্ত করতে পারছি না। কারণ ছাত্ররা সকল রুমে তালা মেরে দিয়ে প্রতিবাদ করছে।”

এ কারণে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষের লক্ষ্যে সকলের সহযোগিতা চান তিনি। তিনি আরও জানান, “বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের যে দাবি—কোনোপ্রকার রাজনীতি না থাকা সেটির সাথে তিনিও একমত।”

কুয়েট ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদ বলেন, “আমরা সিন্ডিকেট সভা করে ছাত্রদের ছয় দফা দাবির সকল দাবি মেনে নিয়েছি। সংঘর্ষের সংবাদ পাওয়া মাত্র আমি ছাত্রদের সাথে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসতে দেরী করায় সংঘর্ষে আমাদের ছাত্ররা বেশি আহত হয়েছে। আমি আমার ওপর অর্পিত সকল দায়িত্ব পালন করেছি। ছাত্রদের দাবিও মেনে নিয়েছি। শুধুমাত্র তাদের পদত্যাগের দাবিটি মানা হয়নি। আমি আশা করি ছাত্ররা সকল কিছু বুঝে ক্লাসে ফিরবে।”

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের পর আজ দ্বিতীয় দিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এর আগে, বুধবার রাতে খান জাহান আলী থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেখানে চার থেকে পাঁচশত জনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত এই মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

বিশ্ববিদ্যালয় এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ববিদ্যালয় - এর সব খবর



রে