ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

গাজায় বড় হামলার প্রস্তুতি ইসরায়েলের

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ১৩ ১৯:৪৫:৫০
গাজায় বড় হামলার প্রস্তুতি ইসরায়েলের

ডুয়া ডেস্ক: গত ১৫ মাস ধরে অব্যাহত হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞের পর যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিল গাজাবাসী। তবে আবারও তাদের ওপর নির্যাতনের খড়গ আসতে যাচ্ছে। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বৈঠকের পর এই তৎপরতা বেড়েছে। বৈঠকের পর ট্রাম্প গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে সেখানে উন্নয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন, এবং গাজাবাসীকে আর সেখানে ফিরতে দেওয়া হবে না বলেও জানান দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা ট্রাম্প।

এরপর যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েল। এতে চার ফিলিস্তিনি নিহত এবং কয়েকজন আহত হন। এই হামলার প্রতিবাদে বন্দি বিনিময় চুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী। তবে আগামী শনিবারের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি না দিলে ফের গাজায় ভয়াবহ হামলা চালানো হবে বলে হুমকি দেয় নেতানিয়াহু।

এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় আবারও হামলা-অভিযান শুরুর বিষয়ে নেতানিয়াহুর হুমকির পর থেকেই ভূখণ্ডটির আশপাশে বাড়তি সেনা মোতায়েন শুরু করেছে ইসরায়েল। অভিযানের প্রস্তুতি হিসেবে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) থেকে ট্যাংকসহ ভারি সাঁজোয়া যানও জড়ো করা হচ্ছে গাজা সীমান্তে।সেইসঙ্গে ডাকা হয়েছে দেশটির রিজার্ভ সেনাদেরকেও।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে জিম্মি মুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দিয়েছে হামাস। সেই জেরেই গাজায় আবারও আগ্রাসন চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। আগ্রাসন শুরুর পূর্ব পদক্ষেপ হিসেবে রিজার্ভ বাহিনী তলব করে সীমান্তে তাদের মোতায়েন করছেন নেতানিয়াহু।

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীর জিম্মি মুক্তি স্থগিতের ঘোষণার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও হুাঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আগামী শনিবার দুপুর ১২টার মধ্যে সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া না হলে যুদ্ধবিরতি বাতিল করা হবে।

এরপর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, আগামী শনিবার দুপুরের মধ্যে আমাদের জিম্মিদের মুক্তির জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আহ্বানকে স্বাগত জানাই। এছাড়া, গাজার ভবিষ্যতের জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঐতিহাসিক পরিকল্পনাকেও আমরা স্বাগত জানাই। নেতানিয়াহু আরও বলেন, হামাস যদি যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে আমাদের জিম্মিদের মুক্তি না দেয়, গাজায় তীব্র লড়াই শুরু করবে ইসরাইল।

এদিকে গাজা দখল এবং সেখানকার ফিলিস্তিনিদের অন্য জায়গায় সরিয়ে নিতে ট্রাম্পের বিশ্বজুড়ে নিন্দা কুড়ানো পরিকল্পনা ভূখণ্ডটির ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতিকে হুমকির মুখে ফেলবে এবং আঞ্চলিক অস্থিরতা উসকে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন আরব বিশ্বের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আরব লীগের মহাসচিব আবুল গেইত সতর্ক করে বলেছেন, ট্রাম্প যদি তার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হন, তাহলে তিনি ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে।’ এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যকে সংকটের নতুন এক চক্রের দিকে নিয়ে যাবে।

সম্ভাব্য সংঘাত এড়াতে চেষ্টা করছে যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো। এ আলোচনার সঙ্গে যুক্ত এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, পরিস্থিতির সংঘাতে মোড় নেওয়া ঠেকাতে নিজেদের ভূমিকা জোরদার করেছেন মধ্যস্থতাকারীরা।

এদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেই পশ্চিম তীরে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। বুধবার নূর শামস শরণার্থী শিবিরে ব্যাপক হামলা চালায় তারা।এতে অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। জবাবে আল কুদস ব্রিগেডের সদস্যরা ইসরাইলি সেনাদের লক্ষ্য করে প্রতিরোধ হামলা চালানোর দাবি করেছে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে