ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

আসছে পবিত্র শবে বরাত, যেভাবে করবেন ইবাদাত

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ১২ ১২:৩৪:৩০
আসছে পবিত্র শবে বরাত, যেভাবে করবেন ইবাদাত

ডুয়া ডেস্ক : শাবান মাস হলো আমলনামা উত্থাপনের মাস। এ মাসে আল্লাহর দরবারে আমাদের এক বছরের আমল পেশ করা হয়। তাই এই মাসে বিশেষভাবে ইবাদত-বন্দেগিতে মনোযোগী হওয়া উচিত।

শাবান মাসটি রমজানের আগমনী বার্তা। এটি আমাদের শারীরিক ও আত্মিকভাবে রমজানের প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ প্রদান করে। এই মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা উত্তম, বিশেষত ১৩, ১৪, ১৫ তারিখের রোজাগুলো রাখলে অনেক বেশি বরকত লাভ হয়।

শাবান মাসের একটি ফজিলত হল, অর্ধ-শাবানের রাত। অর্থাৎ চৌদ্দ শাবান দিবাগত রাত। এ রাতের বিশেষ ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে।

হাদিসে বর্ণিত আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "আল্লাহ তায়ালা অর্ধ-শাবানের রাতে সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন, অতঃপর তিনি তার সকল সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন, তবে শিরককারী ও বিদ্বেষপোষণকারী ব্যতীত (এই দুই শ্রেণিকে তিনি ক্ষমা করেন না)।" (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫৬৬৫, বাইহাকী ৩/৩৮২, হাদিস : ৩৮৩৩)

ওলামায়ে কেরামের বক্তব্য হল, কোনো বিশেষ সময়ের ব্যাপারে আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত ও মাগফিরাতের ঘোষণা এলে করণীয় হল, সেই সময়ে সকল গুনাহ থেকে বিরত থেকে নেক আমলের প্রতি যত্নবান হওয়া, যেন আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাতের উপযুক্ত হওয়া যায়।

শবে বরাতে করণীয় ও বর্জনীয়: ইবাদত-বন্দেগিতে মনোযোগী হওয়া, বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া, ইস্তিগফার, নফল নামাজ আদায় করা উচিত। দরিদ্রদের সাহায্য করা, জাকাত ও দান-সদকা দিয়ে গরিব-অসহায়দের সাহায্য করা উচিত। ১৪ শাবানের দিবাগত রাতে রাত জাগরণ, দোয়া, ইবাদত ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা সুন্নত আমল।

বর্জনীয়: অনেক অনির্ভরযোগ্য আমলের বই-পুস্তকে এই রাতে নামাজের যে নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন লেখা আছে, যেমন এত রাকাত নামাজ পড়তে হবে, প্রতি রাকাতে এই সূরা এতবার পড়তে হবে ইত্যাদি, এগুলো ঠিক নয়। বরং স্বাভাবিকভাবে যেকোনো সূরা দিয়ে দুই রাকাত করে নফল নামাজ পড়বে। এগুলো বিদআত ও কুসংস্কার।

শাবান মাসে কিছু ভুল বিশ্বাস ও বিদআত ছড়িয়ে আছে। যেমন ১৪ শাবানের দিবাগত রাতে বিশেষ পদ্ধতিতে নামাজ পড়া, হালুয়া-রুটির আয়োজন করা, কবর জিয়ারতকে ফরজ মনে করা ইত্যাদি।

এগুলোর কোনো প্রমাণ সহিহ হাদিসে নেই। শাবান মাসে আমাদের উচিত গুনাহ থেকে বিরত থাকা, মিথ্যা বলা, গিবত করা এবং হারাম কাজে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকা, কারণ এ মাসে আমলনামা উত্থাপিত হয়।

শুধু শাবানের ১৪ তারিখের দিবাগত রাতকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করা, অনেকে মনে করে, শুধু এই রাতেই ইবাদত করতে হবে, অন্য রাতের গুরুত্ব নেই। এটি ভুল ধারণা। বরং পুরো মাসজুড়েই ইবাদত করা উচিত।

শাবান মাস হলো আল্লাহর এক বিশেষ অনুগ্রহ, যা গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার, আমলনামা শুদ্ধ করার এবং রমজানের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার সুবর্ণ সুযোগ।

সুতরাং, আসুন আমরা এই মাসকে গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করি, বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগি করি এবং রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই বরকতময় মাসের ফজিলত অর্জন করার তাওফিক দান করুন।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

লাইফস্টাইল এর সর্বশেষ খবর

লাইফস্টাইল - এর সব খবর



রে