ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

আদানির কাছে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ চেয়েছে বাংলাদেশ

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ১১ ১৮:১৩:২১
আদানির কাছে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ চেয়েছে বাংলাদেশ

ডুয়া নিউজ : ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডায় অবস্থিত আদানি পাওয়ারের উৎপাদন ক্ষমতা ১৬০০ মেগাওয়াট। চুক্তি অনুযায়ী এর পুরোটাই বাংলাদেশে সরবরাহ করার কথা ছিল। তবে গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে আদানি গ্রুপ বাংলাদেশে তার উৎপাদন ক্ষমতার মাত্র অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) আসন্ন গ্রীষ্ম মৌসুমের জন্য সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আদানিকে অনুরোধ জানিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আদানিকে ১৬০০ মেগাওয়াট প্লান্ট থেকে পুনরায় সম্পূর্ণরূপে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করতে বলেছে। শীতের সময় চাহিদা কম এবং অর্থপ্রদান নিয়ে সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি আদানির বিক্রিও কমে যায়। এর তিন মাস পর বাংলাদেশ আবার বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা জানাল।

২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে বাংলাদেশের সঙ্গে ২৫ বছরের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল আদানি। এর মাধ্যমে তারা ঝাড়খণ্ডের ২ বিলিয়ন ডলারের প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিটের প্রতিটি থেকেই একচেটিয়াভাবে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রি করে আদানি।

রয়টার্স জানিয়েছে, অর্থপ্রদানে বিলম্বের কারণে গত বছরের ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশে সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনে আদানি গ্রুপ। এর ফলে গত ১ নভেম্বর তাদের একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে প্ল্যান্টটি প্রায় ৪২ শতাংশ সক্ষমতায় কাজ করছে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড রয়টার্সকে জানায়, তারা আদানির কোম্পানিকে মাসে ৮৫ মিলিয়ন বা ৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার করে পরিশোধ করছে। এখন চাহিদা বাড়ায় দ্বিতীয় ইউনিট থেকেও পুনরায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করতে বলেছে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম রয়টার্সকে বলেন, “আমাদের প্রয়োজন অনুসারে, তারা দ্বিতীয় ইউনিটটি সিঙ্ক্রোনাইজ করার পরিকল্পনা করেছে, কিন্তু উচ্চ কম্পনের কারণে তা হয়নি। কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে সোমবার থেকে ইউনিটটি পুনরায় চালু করা যায়নি।

তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে আমরা মাসে ৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার দিচ্ছি। আমরা আরও বেশি অর্থ পরিশোধের চেষ্টা করছি এবং আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, বকেয়া কমিয়ে আনা। ফলে এখন আদানির সঙ্গে কোনো বড় সমস্যা নেই।”

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে আদানি পাওয়ারের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে রয়টার্স। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ আহ্বানে সাড়া দেননি। যদিও গত ডিসেম্বরে আদানির একটি সূত্র জানিয়েছিল, বিপিডিবির কাছে তাদের প্রায় ৯০০ মিলিয়ন বা ৯০ কোটি ডলার বাকি আছে। ওই সময় বিপিডিবি চেয়ারম্যান বলেছিলেন, এই বকেয়ার পরিমাণ ৬৫ কোটি ডলার।

বিদ্যুতের দাম নির্ধারণে আদানির সঙ্গে বিরোধ আছে বাংলাদেশের। রয়টার্স জানায়, অন্যান্য ভারতীয় বিদ্যুতের চেয়ে প্রায় ৫৫ শতাংশ বেশি অর্থে বাংলাদেশের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র।

এদিকে, ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিটি বাংলাদেশের একটি আদালত বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই কমিটির প্রতিবেদন এ মাসের মধ্যে প্রকাশিত হতে পারে। প্রতিবেদনটির ভিত্তিতে আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত বছরের আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে আন্দোলনের কারণে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর সেপ্টেম্বর মাসে শেখ হাসিনার সময়ে স্বাক্ষরিত প্রধান জ্বালানি চুক্তিগুলো পুনরায় পরীক্ষা করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল নিয়োগ করে অন্তর্বর্তী সরকার।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে