ঢাকা, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

১২১ বিদ্যালয় বন্ধ করে বনভোজন, শিক্ষা অফিসারকে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ১১ ১৫:৪৯:৩৪
১২১ বিদ্যালয় বন্ধ করে বনভোজন, শিক্ষা অফিসারকে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ

ডুয়া ডেস্ক : চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ১২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একদিনের জন্য বন্ধ রেখে মিলনমেলা ও বনভোজনের আয়োজন করেছে শিক্ষক এবং শিক্ষক সমিতির নেতারা। বিদ্যালয়ের সব শিক্ষকরা এতে অংশগ্রহণ করেন। তবে স্কুল বন্ধ রেখে এ ধরনের আয়োজন করায় বিষয়টি নিয়ে অভিভাবক মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

এরপর দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয়গুলো খোলার নির্দেশ দেন এবং শিক্ষক ছুটি মঞ্জুর করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে শোকজ করা হয়েছে। তাঁকে এক দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

এ আয়োজনটি ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার চুয়াডাঙ্গা বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ও সদর উপজেলা শাখার উদ্যোগে আক্কাছ লেক ভিউ পার্ক অ্যান্ড রিসোর্টে অনুষ্ঠিত হয়।

অভিভাবকরা অভিযোগ করছেন যে, চলতি বছরে অনেক শিক্ষার্থী এখনো নতুন বই পায়নি। এরই মধ্যে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির পর সোমবার বিদ্যালয় বন্ধ করে শিক্ষকরা বনভোজনের আয়োজন করেন। এরপর মঙ্গলবার সরকারি ছুটি থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় আরও পিছিয়ে পড়েছে। অভিভাবকদের দাবি, এমন আয়োজন যেকোনো ছুটির দিনে করা উচিত ছিল, বিদ্যালয় বন্ধ রাখা ঠিক হয়নি।

শিক্ষক সমিতির নেতারা জানাচ্ছেন, তারা সংরক্ষিত ছুটি নিয়েই এই আয়োজন করেছেন এবং ছুটি বাতিল হওয়ার পর সবাই ক্লাসে ফিরে গেছেন।

এদিকে, চুয়াডাঙ্গা উপজেলার শিক্ষা অফিসার লাইলা তাসলিমা নাসরিনের কাছে ছুটি কেন এবং কিভাবে মঞ্জুর করা হয়েছে, তা জানতে ব্যাখ্যা তলব করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। তাঁকে মঙ্গলবারের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

জানা যায়, স্কুল বন্ধ রেখে এই আয়োজন করায় আলোচনার জন্ম হলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা উপজেলা শিক্ষা অফিসার, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ প্রায় সব কর্মকর্তা কর্মচারী দাওয়াত পেলেও শেষ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন যোগ দেননি। তবে পিকনিকের চাঁদা দিয়েও অনেকের ভাগ্যে জোটেনি পিকনিকের রান্না করা খাবার।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম গনমাধ্যমকে বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে সংরক্ষিত ছুটির আবেদন করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমাদের ছুটি মঞ্জুর করেন। এরপরই আমরা মিলনমেলা ও বনভোজনের আয়োজন করি। আয়োজন চলাকালীন সময়ে হঠাৎ আমাদের জানানো হয় ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এখনি স্কুল খোলার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার। এরপরই দুপুর ২টার মধ্যে আমরা গুছিয়ে বের হই।

তিনি বলেন, শিক্ষকরা বছরে তিনটি সংরক্ষিত ছুটি পেয়ে থাকেন। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা ছুটি পাস করিয়ে আয়োজন করেছিলাম। তবে কয়েকটা বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অংশগ্রহণ না করায় তাদের বিদ্যালয় খোলা ছিল। এ বিষয়টি এখন কেন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে তা আমার জানা নেই।

শিক্ষা অফিসারের অনুমতিক্রমে প্রধান শিক্ষকরা বছরে তিন দিন সংরক্ষিত ছুটি নিতে পারেন জানিয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার লাইলা তাসলিমা নাসরিন বলেন, শিক্ষক সমিতির যারা আছেন উনারা চাইছিলেন তাদের আয়োজনে পিকনিক করবেন। তাই ১২১টি বিদ্যালয়ের সব শিক্ষক সংরক্ষিত ছুটির জন্য আবেদন করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমি ছুটি দেই।

তিনি বলেন, এর আগে কখনো এমন হয়নি। শিক্ষকরা সংরক্ষিত ছুটি নিয়ে থাকেন। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে শিক্ষকদের মধ্যে দুটি গ্রুপিংয়ের কারণে রিপোর্ট হয়েছে৷ আয়োজন চলাকালীন সময়ে ছুটি বাতিল করা হলে সকল শিক্ষকরা তাদের বিদ্যালয়ে যায় এবং ক্লাস শুরু করেন। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার। আমি ব্যাখ্যা দেব।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে