ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

গণঅভ্যুত্থানে আহতদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত 

২০২৪ ডিসেম্বর ১২ ২০:৩৯:২৫
গণঅভ্যুত্থানে আহতদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত 

ডুয়া নিউজ : নব্বই শতাংশ মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য চিকিৎসা বঞ্চিত। চিকিৎসার সুব্যবস্থাও তেমন নেই। এক লাখ মানুষের জন্য মাত্র একজন মানসিক স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। এছাড়া জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে আহত এবং নিহত পরিবারও মানসিক স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

জুলাই বিপ্লব পরবর্তী মানসিক স্বাস্থ্যের সংকট ও পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশন "মেন্টাল হেলথ ক্রাইসিস: ডিলিং উইথ পোস্ট জুলাই রেভ্যুলেশনারি আসপেক্টস" শীর্ষক এক সেমিনারের এসব তথ্য জানান।

বিশেষজ্ঞরা জানান, এমন পরিস্থিতিতে মনোচিকিৎসক, মনোবিজ্ঞানী, ও অন্যান্য প্রশিক্ষিত মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবী রয়েছেন তিন হাজারের মত নিচে। এই পেশাজীবীদের আশি শতাংশেরও বেশি শুধু ঢাকাতেই কাজ করছেন। অন্যদিকে মানসিক সমস্যা আছে এমন মানুষদের নব্বই শতাংশ চিকিৎসার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের কাছে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছে না। একদিকে নানা কুসংস্কার বিশ্বাস অন্যদিকে সবার পক্ষে ঢাকায় এসে বা বিভাগীয় শহরের হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নেয়া সম্ভব হয় না। এছাড়া দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য খাতে পুরো বাজেটে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বরাদ্দ আছে মাত্র ০.৫ শতাংশ।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। মনোবিজ্ঞানের এই অধ্যাপক সেমিনার আয়োজনের প্রেক্ষাপট, মানসিক স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন রিসোর্স ও তার সীমাবদ্ধতা এবং ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন "জুলাই আগস্টে কোটা সংস্কার ও সরকারের পদত্যাগের গণঅভ্যুত্থানে প্রায় চৌদ্দশত তেইশ জনেরও বেশী মানুষ নিহত হয়েছে, আহতদের সংখ্যা বাইশ হাজারের ও বেশী যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যকই ছাত্র-ছাত্রী, শিশু-কিশোর।

তিনি আরও বলে, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতিতে আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পায় মানসিক স্বাস্থ্যের অন্যতম ও জটিল একটি রোগ- পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার, যেটাকে সংক্ষেপে ‘পিটিএসডি’ বলা হয়। তীব্র শোক বা মানসিক আঘাত থেকে এ সমস্যা দেখা দেয়। এ কারণে অনেক সময়ই তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়, সামাজিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে, পড়াশোনায় অমনোযোগিতা বা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, কর্মক্ষেত্রে কাজের পারফরম্যান্স খারাপ হয়ে যায়, এমনকি চাকুরি বা ব্যবসা ছেড়ে দেওয়ার মতো কাজও করে ফেলে নিজেকে প্রতিরক্ষার জন্য। এর মাঝে অনেকেই কারণ থাকুক বা না থাকুক বিষণ্ণতা বা অবসাদে ভুগতে পা, এমনকি আত্মহত্যার চিন্তা শুরু করতে পারেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে আহতদের অঙ্গহানির জন্য তাদের যারা তিরস্কার বা কটু কথা দ্বারা মানসিক আঘাত দেয় তারা মানুষের মধ্যে পড়ে না। আমরা দেখেছি আন্দোলনের পর থেকে অনেক মা বাবারাও ট্রমাটাইজড। অনেক পরিবারের মেয়েরা আন্দোলনে ট্রমাটাইজড হয়ে লোক ভয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হচ্ছেন না এই ভয়ে যে, যদি মানুষ জেনে যায় তাহলে তাদের বিয়ে দিতে সমস্যা হতে পারে।

উপদেষ্টা আরোও জানান, আজ সকালে কেবিনেট মিটিংয়ে আহত ও শহীদ পরিবারে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে