বাংলাদেশের সঙ্গে জনশক্তি আমদানি-রপ্তানি চুক্তি করতে চায় কুয়েত

ডুয়া নিউজ: মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী দেশ কুয়েতকে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি জনশক্তি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে উপদেষ্টার অফিস কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত কুয়েতের রাষ্ট্রদূত আলী তুনিয়ান আবদুল ওয়াহাব হামাদাহ সাক্ষাৎ করতে এলে উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।

মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ও কুয়েতের গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে। কুয়েতে প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি জনশক্তি নেওয়ার জন্য কুয়েত সরকারকে আহ্বান জানাই।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘কুয়েত বাংলাদেশ থেকে আরও নারী গৃহকর্মী নিতে আগ্রহী। আমি তাদের নারীর পাশাপাশি পুরুষ কর্মী নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

এ সময় বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি আমদানি বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, কুয়েত মুসলিম ও এশিয়ান মিত্র হিসেবে সবসময় বাংলাদেশের পাশে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। বাংলাদেশও ইরাক-কুয়েত যুদ্ধ পরবর্তী পুনর্বাসন ও মাইন অপসারণে কুয়েতকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। স্থলমাইন অপসারণে ২৭০ জন বাংলাদেশি সৈন্য নিহত ও ৫৬ জন আহত হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে জনশক্তি আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কোনো চুক্তি নেই। এ ধরনের চুক্তি দ্রুত করা দরকার।

বৈঠকে দুদেশের মধ্যে জনশক্তি রপ্তানি, মিলিটারি ও নিরাপত্তা ইস্যু, রোহিঙ্গাদের সহায়তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পারস্পরিক সহযোগিতা-সহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

কুয়েত বাংলাদেশে উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। এছাড়া কুয়েত রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে বলেও জানান তিনি।

উপদেষ্টা আরও বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইউএসএইডের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা বন্ধ করে দেয়, তাহলে কুয়েত যেন রোহিঙ্গাদের উন্নয়ন এবং পুনর্বাসনে আরও সহায়তা প্রদান করে। জবাাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০১৭ সালে কুয়েত রোহিঙ্গা সংকটকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে সহায়তা করেছিল এবং ভবিষ্যতেও এই ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

বাংলাদেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত জানতে চাইলে উপদেষ্টা জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। ক্রমান্বয়ে আইনশৃঙ্খলা আরও উন্নত হচ্ছে। রাষ্ট্রদূত এ সময় কুয়েত দূতাবাসসহ বারিধারা ডিপ্লোমেটিক এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান।