ঢাকা, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

তরুণ প্রজন্মকে বোঝাতে চাই ভাষা আন্দোলন কেন হয়েছিল : প্রো-ভিসি অধ্যাপক লুৎফর

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ০১ ১২:৪৪:৩৩
তরুণ প্রজন্মকে বোঝাতে চাই ভাষা আন্দোলন কেন হয়েছিল : প্রো-ভিসি অধ্যাপক লুৎফর

ঢাবি প্রতিনিধি: ভাষা আন্দোলন কেন হয়েছিল তরুণ প্রজন্মকে সেটা বোঝানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠান শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়। আমরা তরুণ প্রজন্মকে বোঝাতে চাই ভাষা আন্দোলন কেন হয়েছিল, কিভাবে হয়েছিল; সেই আন্দোলনে কারা আত্মাহুতি দিয়েছিলেন, আমাদের কি করণীয়, নতুন প্রজন্মের কি করণীয়; তাদের মধ্যে সেই ভাবমূর্তি তৈরি করতে চাই।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘জাতীয় সাহিত্য-সংস্কৃতিক ঐক্যজোট' আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, জাতীয় শহীদ মিনারে যখন কেউ উপস্থিত হয় তখন আমার মতো আবেগে আপ্লুত হয়।শহীদ দিবসের তাৎপর্য এদেশের মানুষের কাছে একটি অনন্য বিষয়। একটি দেশ ও জাতি হিসেবে আমাদের যা কিছু গর্বের, আনন্দের, প্রশংসার তার মধ্যে অন্যতম হলো আমাদের ভাষা দিবস, শহীদ দিবস। সেই শহীদ দিবসের যে মাস ফেব্রুয়ারি তার শরুর দিন আজ। নানা কারণে এই দিনটি আমাদের কাছে তাৎপর্য ধারণ করে এবং তাকে ধারণ করে এই জাতীয় সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট।

তিনি বলেন, এই ভাষার মাসকে কেন্দ্র করে যারা আয়োজন করেছে তাদেরকে কৃতজ্ঞতা জানাই। নতুন সংগঠন হিসেবে তাদের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। আমাকে এখানে প্রধান অতিথির আসন দেয়া এবং নতুন প্রজন্মের বাচ্চাদের সামনে দাঁড়িয়ে দুটি কথা বলার সুযোগ করে দেয়ার জন্য আমি এই সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, আজকে শিশুদের নিয়ে অসাধারণ আয়োজন করা হয়েছে। আমি খুবই আনন্দিত হয়েছি যে এই আয়োজনে যুক্ত হয়েছে বড়দের স্বাক্ষরতা, আঞ্চলিক ভাষায় বক্তৃতা, শিশুদের হাতেখড়ির মতো নানা আয়োজন। এই প্রত্যেকটি আয়োজন আমাদের নিজেদের যে সংস্কৃতি তার প্রতিধ্বনি করে।

তিনি বলেন, আজকে যে শহীদ মিনারের এই অনুষ্ঠান যে আমরা করতে পারছি, এ ধরনের আয়োজন আমরা অনেকদিন করতে পারি নাই। ফ্যাসিবাদের কারণে এই শহীদ মিনার সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত ছিলো না। শুধু স্বৈরাচারের দালালদের জন্য এটা নির্ধারিত ছিলো। ‘২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমাদের এখানে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। এই গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।

উপ-উপাচার্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন আমরা সবাই মিলে আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ ও এই দেশের সাহিত্য সংস্কৃতির যে চেতনা সেটাকে চিনতে শিখি, চেনাতে সাহায্য করি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তমদ্দুন মজলিসের সভাপতি ড. মোহাম্মদ সিদ্দিক বলেন , আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি এখনো ভাষার জন্য কাজ করে করে যাচ্ছি। এবার বইমেলায় আমরা একটা স্টল করেছি সেখানে আপনাদের আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে সকাল ৯টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শিশু-কিশোরদের ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, উপস্থিত শিশুদের হাতেখড়ি, আঞ্চলিক ভাষায় গল্প বলা, বড়দের বাংলা বর্ণমালা লেখা, পিঠা আপ্যায়ন, বিদ্রোহী ও তারুণ্যের কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে গেজেট প্রকাশ করায় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ ও কবিকে বিভিন্নভাবে স্মরণ করা, ইন্টারনেটের আসক্তি থেকে দূরে সরিয়ে বইপ্রেম বাড়াতে শিশুদের মাঝে বই উপহার, প্রতিবাদের '৪৮-'৫২ ও প্রতিবাদের '২৪ এর গ্রাফিতি প্রদর্শনী, দর্শক-মন্তব্য সংগ্রহ, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং পুরস্কার বিতরণীর আয়োজন করে জাতীয় সাহিত্য-সংস্কৃতিক ঐক্যজোট।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘জাতীয় সাহিত্য-সংস্কৃতিক ঐক্যজোট'র সভাপতি রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন একুশ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক নূর হোসেন রানা, ঐক্যজোটের যুগ্ম সচিব সৈয়দ নাজমুল আহসান, মহাসচিব শাহ সীদদীক প্রমুখ।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে