ঢাকা, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯ মাঘ ১৪৩১

দর্শন বিভাগ অ্যালামনাইদের পদচারণায় মুখর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণ

২০২৫ জানুয়ারি ২৪ ১৬:২৩:৫৮
দর্শন বিভাগ অ্যালামনাইদের পদচারণায় মুখর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণ

ডুয়া নিউজ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণ। ‘সৌহার্দ্য ও স্মৃতির বন্ধনে আবদ্ধ আমরা, এসো মিলি প্রাণের আনন্দে’ স্লোগানে এ প্রাঙ্গণে একত্রিত হন তারা।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (ডুপডা) আয়োজিত ১৫তম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশে এ প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং সদস্য সচিব এটিএম আবদুল বারী ড্যানি। এছাড়া অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালদ দর্শন বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েমনের সভাপতি অধ্যাপক সুলতানা মুনীরা জাহান।

পুনর্মিলনীতে যোগ দিতে সকাল থেকেই টিএসসি প্রাঙ্গণে উপস্থিত হতে থাকেন দর্শন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীরা। কেউ কেউ ঘন কুয়াশা আর শীতকে উপেক্ষা করে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হাজির হন টিএসসিতে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতির সংখ্যাও বাড়তে থাকে। টিএসসি প্রাঙ্গণে সাবেক শিক্ষার্থীরা তাদের প্রিয় বন্ধু-বান্ধবীদের কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। একে অপরের সাথে সুখ এবং কষ্টের কথা ভাগাভাগি করেন। প্রশান্তি পান প্রিয় মানুষগুলোর সান্নিধ্য পেয়ে।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে কর্মজীবনে প্রবেশ করা কেউ কেউ অবসরে চলে গেছেন। পুনর্মিলনীতে অনেকে নিজেদের স্ত্রী, ছেলে-মেয়েদেরও নিয়ে এসেছেন প্রিয় প্রাঙ্গণে।

এসময় অনেকেই ডুয়া নিউজে নিজেদের অনুভুতি প্রকাশ করেন। সাবেক এই শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রাণের প্রিয় প্রাঙ্গণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এটা আমাদের আবেদন আর ভালবাসার জায়গা। দীর্ঘ সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছি। অনেক বন্ধু হয়েছে এখানে। কেউ কেউ না ফেরার দেশে চলে গেছে। আবার যারা বেঁচে আছে সবাই আজ আসতে পারে নাই।

অ্যালামনাই সদস্যরা জানান, আমাদের মধ্যে অনেকে কর্মজীবনে ব্যস্ত। ব্যস্ততার কাটিয়ে এখানে আসা কিছুটা কঠিন হয়ে যায়। শত প্রতিকূলতার মাঝেও, ব্যস্ততার মাঝেও আজ এখানে আসতে পেরে সত্যি নিজেদের ধন্য মনে করছি। প্রতি বছরই এখানে আসার ইচ্ছা রয়েছে।

এসময় ১৯৭৫ সনে পাশ করা একজন প্রাক্তন জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭৫ সালের এমএ এর ব্যাচের ছাত্র। দীর্ঘ দিন বিচার বিভাগে কাজ করার পর এখন অবসরে আছি। দীর্ঘ দিন পর ক্যাম্পাসে এসে খুব ভালো লাগছে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেই পুরো ক্যাম্পাসটা পায়ে হেঁটে ঘুরেছি। এতো ভালো লাগছিল যে ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। আমাদের ব্যাচের অনেকেই পরপারে চলে গেছে। আমরা অল্প কয়েকজন এখানে এসেছি। তবুও ভালো লাগছে।

১৯৮২ ব্যাচের আরেক প্রাক্তন শিরিন সুলতানা ইতি বলেন, আমরা প্রতি বছরই আসি। পুরানো লোকদের দেখে খুবই ভালো লাগছে। তাদের সাথে কথা বলতেছি, পুরানো ক্যাম্পাস, পুরানো স্মৃতি মনে পড়ছে। আগে টিএসসিতে আড়াই টাকা মিলে ভাত খেতাম। কত যে স্মৃতি জমে আছে, সেগুলো মনে পড়ে।

দুই সন্তানের জননী ফেরদৌস নামের আরেক প্রাক্তন বলেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে এখান থেকে বের হয়ে যাই। আমি শামসুন্নাহার হলে থাকতাম। ক্যাম্পাসে আসলে সেই পুরানো ফিল পাই, এটা খুব ভালো লাগে।

১৯৮৬ ব্যাচের আলীম আল রাজি নামে আরেক প্রাক্তন বলেন, ক্যাম্পাসে এসে খুব ভালো লাগছে। পুরানো বন্ধু, পুরানো স্মৃতি বারবার ক্যাম্পাসে টানে। সেই টান থেকে আবার আসতে বাধ্য হয়েছি। ভালো লাগা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

অ্যালামনাই এর সর্বশেষ খবর

অ্যালামনাই - এর সব খবর



রে