ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

ইউল্যাবে দুই পক্ষের আন্দোলন ঘিরে উত্তেজনা; অপ্রীতিকর ঘটনার শঙ্কা

২০২৫ জানুয়ারি ১২ ২১:৪৪:০৪
ইউল্যাবে দুই পক্ষের আন্দোলন ঘিরে উত্তেজনা; অপ্রীতিকর ঘটনার শঙ্কা

ডুয়া ডেস্ক: দেশের অন্যতম বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)-এর শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন করে আসছেন। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন, যার মধ্যে সর্বশেষ ২ জানুয়ারি তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেন। একইদিন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যের পক্ষে অবস্থান নেন আরেকদল শিক্ষার্থী।

ওইদিন প্রশাসনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা তাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেন, তবে দাবি না মানলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তারা। অপরদিকে, অপরদিকে পরিস্থিতি বিবেচনায় কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন ভিসির পক্ষে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান, যেকোন সময় বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এ আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে গ্রাফিতি আঁকার কারণে দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ ওঠার পর। যদিও পরে এটি প্রত্যাহার করা হয়, তবুও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। গত ২ জানুয়ারি উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমানের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় এবং কয়েকটি দাবি বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টারের কাছে জমা দেন আন্দোলনকারীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের দাবির বিষয়ে আশ্বাস দেয় এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা ঘোষণা করে, ফলে রাত সাড়ে ১০টায় অনশন স্থগিত করেন তারা। অপরদিকে, উপাচার্যের পক্ষে অবস্থান করা শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন যে, আন্দোলনকারীরা ফ্যাকাল্টি সদস্যদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন, যা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন যে, ইউল্যাব প্রশাসন তাদের দাবি উপেক্ষা করে ফ্যাসিবাদী আচরণ করছে এবং গ্রাফিতি আঁকার জন্য শাস্তি প্রদান ও শিক্ষার্থীদের প্রতি শোষণমূলক আচরণ করছে। তারা আরও বলেন, তদন্ত কমিটি গঠনের নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সাথে প্রহসন করছে এবং সেমিস্টার ব্রেকের পর বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ৯ জানুয়ারি একটি র‍্যালি এবং মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করেন, যেখানে তারা অভিযোগ করেন যে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ১ জানুয়ারি ফ্যাকাল্টি সদস্যদের অপদস্থ ও হেনস্তা করেছেন। তারা এমন আচরণের নিন্দা জানান এবং দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আসিফ মাহামুদ জানান, তারা একটি নিরপেক্ষ তদন্ত চান এবং গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া সেমিস্টার ব্রেকের মধ্যে প্রশাসন বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো সন্তোষজনক পদক্ষেপ না পেলে ক্যাম্পাস খুললে বড় ধরনের আন্দোলন করবেন।

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো: ১. জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে অসম্মান এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হয়রানির দায়ে উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমানের পদত্যাগ। ২. ফ্যাসিবাদী আচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের অপসারণ। ৩. ডিসিপ্লিনারি কমিটি ও প্রক্টরিয়াল বডির ছাত্রবিরোধী সিদ্ধান্তের দায়ে পদত্যাগ। ৪. ইউল্যাবের কোড অব কনডাক্টের যৌক্তিক সংস্কার। ৫. মুক্তচিন্তা, মতপ্রকাশ এবং ব্যক্তিস্বাধীনতাকে হরণ করে, এমন সকল কলা কানুন ইউল্যাবের আইন কাঠামো থেকে বিলোপ করতে হবে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

বিশ্ববিদ্যালয় এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ববিদ্যালয় - এর সব খবর



রে