ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া অন্যায়,পাপ: অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস

২০২৫ জানুয়ারি ১২ ১৮:০৫:২৬
দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া অন্যায়,পাপ: অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস

ডুয়া নিউজ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেছেন, মেধাবি ছেলে-মেয়েদের বাদ দিয়ে দলীয় বিবেচনায় কাউকে নিয়োগ দেওয়া অন্যায় না, পাপ।

সম্প্রতি দ্য ডেইলি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সাথে ‘সংস্কার সংলাপ’ বিষয়ক এক বিশেষ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, বিগত বছরগুলোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্যা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে তীব্র পক্ষপাতিত্ব হয়েছে।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নীল দল বা সাদা দল তাত্ত্বিকভাবে খারাপ জিনিস না। শিক্ষকদের দাবি দাওয়া, কিভাবে শিক্ষকদের বাজেট বাড়ানো যায়, পেনশনগুলো ঠিকভাবে পাই কিনা এবং বাসাবাড়ির বিষয়গুলো নিয়ো বার্গেনিং করবে। নীল দল এবং সাদা দল একাকার হয়ে গিয়েছিল। ইলেকশনে জিততে হবে, ভোটার লাগবে। কাজেই নিয়োগের ক্ষেত্রে এমন মানুষ বাছতে হবে যে তাকে ইলেকশনে সিন্ডিকেট মেম্বর বানাবে, প্রেসিডেন্ট বানাবে, সেক্রেটারি বানাবে এবং তাকে ডিন বানাবে। সুতরাং দারুনভাবে তাদের মধ্যে একটা আঁতাত গড়ে উঠেছিল।

ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্টিজম করে শিক্ষক নিয়োগ করা হলে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ক্লাশ রুম সব জায়গাতেই জাতিকে, ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বঞ্চিত করবে। এজন্য মেধাবি ছেলে-মেয়েকে বাদ দিয়ে দলীয় বিবেচনায় কাউকে নেওয়াটা অন্যায় না, এটা পাপ।

তিনি বলেন, ওভার দ্যা ইয়ার্স শুধু ঢাকা না, সমস্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি চাকরিতে, বিসিএসে, কোটায়, পুলিশে সবত্র দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো কিন্তু সব শেষ হয়ে গেছে। তথ্য কমিশন বলেন, মানবাধিকার কমিশন বলেন, বিচার বিভাগ বলেন, পার্লামেন্ট বলেন একটা প্রতিষ্ঠানও নাই। আমাদের একটা প্রতিষ্ঠানও কার্যকর নেই, সবগুলো ডিসফাংশন। বর্তমান সময় পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত ৫ মাস চলে গেল একটা প্রতিষ্ঠানকে প্রফেসর ড. ইউনূসের সরকার ঠিক করতে পারে নাই।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যা ঘটেছে, এখান থেকে উত্তোরণের উপায় সম্পর্কে এই অধ্যাপক বলেন, পার্টি যদি ঠিক হয়, পলিটিক্স যদি ঠিক হয় তাহলে এগুলো আপনা আপনি ঠিক হবে।

শিক্ষকদের পলিটিক্যাল পার্টির সাথে লেজুরবৃত্তি, আনুগত্য করা ঠিক না উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতি একদমই ঠিক না। আমার রাজনীতি থাকবে, আমি জাতীয় রাজনীতিতে লিখব, মতামত থাকবে। কিন্তু একটা পার্টির মধ্যে আমি যখন ইন হয়ে যাই, তখন আমার অস্তিত্ব থাকে না। পুরো পৃথিবীতে সিভিল স্যোসাইটির কাজই হচ্ছে দল কিংবা সরকার ঠিকভাবে চলে কিনা তা চোখে চোখে রাখা।

দেশে থেকে পাচার হওয়া অর্থের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেন, দেশে থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে যা দিয়ে ৯৫টি পদ্মা সেতু হতে পারে। যে দেশের একজন বিধবা মাতাকে মাত্র ৫০০ টাকার নেওয়ার জন্য ৩ মাইল হাঁটতে হয়, ৬০০ টাকা বয়স্ক ভাতা নেওয়ার সেই গরিব দেশের ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ৫ মাস অতিবাহিত হলেও এক টাকাও ফেরত আসার নমুনা আমরা দেখতে পাচ্ছি না।

বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, কুড়িগ্রামে যে পণ্যের দাম দুই টাকা, কাওরান বাজারে সেই পণ্যই বিক্রি হয় ২২ টাকায়। মানুষ প্রথমত বাজারের সুফল চায়। ১৮ কোটি মানুষকে কোনো না কোনভাবে বাজারকে মোকাবেলা করতে হয়। মানুষ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ নিত্যপণ্যের উচ্চ দাম নিয়ে। সিন্ডিকেট কিন্তু এখনো ভাঙা যায়নি। এই সিন্ডিকেট ভাঙাই সরকারের কাজ। তার মানে আপনি ফেল করেছেন।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে