ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১

দেশে প্রথমবার এইচএমপিভি রোগী সনাক্ত: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সতর্কতা

২০২৫ জানুয়ারি ১২ ২০:৪৮:৩৫
দেশে প্রথমবার এইচএমপিভি রোগী সনাক্ত: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সতর্কতা

ডুয়া নিউজ: বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) শনাক্ত হওয়ার পর সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আজ রবিবার (১২ জানুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অধিদপ্তর জানায়, চীনসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং তীব্রতা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে। এছাড়া, দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন হাঁপানি, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, গর্ভবতী নারী এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য এই ভাইরাসটি উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।

বাংলাদেশেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে, এবং সম্প্রতি চীন ও অন্যান্য দেশে এর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ার পর বাংলাদেশে এর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্যবিধি আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জনগণকে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করেছে।

সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশনাসমূহ:

১. শীতকালীন শ্বাসতন্ত্রের রোগসমূহ থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক ব্যবহার করুন। ২. হাঁচি বা কাশির সময় গামছা বা টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন। ৩. ব্যবহৃত টিস্যু অবিলম্বে ঢাকনাযুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলুন এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। ৪. আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন এবং কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন। ৫. ঘন ঘন সাবান ও পানি অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে নিন (অন্তত ২০ সেকেন্ড)। ৬. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, বা মুখ ধরবেন না। ৭. আপনি জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকুন এবং প্রয়োজন হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।

এদিকে, ১২ জানুয়ারি দেশে একজনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান ডা. আহমেদ নওশের আলম।

এইচএমপিভি একটি সংক্রামক রোগ, যা করোনার মতোই হাঁচি, কাশি, আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি অবস্থান, করমর্দন এবং স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। ২০০১ সালে চীনে ভাইরাসটির অস্তিত্বের প্রমাণ মিললেও এখন পর্যন্ত এর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো প্রতিষেধক তৈরি হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে চীনে নতুন করে ভাইরাসটির সংক্রমণ ধরা পড়ে এবং তারপর এটি জাপান, মালয়েশিয়া ও ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে, চিকিৎসক ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তারা বলেন, এই রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং এর প্রতিরোধ ব্যবস্থা করোনাভাইরাসের প্রতিরোধ ব্যবস্থার মতো। চীনের হাসপাতালে এইচএমপিভি রোগীদের চিকিৎসায় প্রচলিত ওষুধই ব্যবহার করা হচ্ছে, কোনো বিশেষ ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে না।

প্রতিরোধের জন্য চিকিৎসকরা নিয়মিত হাত ধোয়া, আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা এবং শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করলে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ খবর

স্বাস্থ্য - এর সব খবর



রে